হেলমেট পরে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা করা হয়েছে। সকালে মিছিলে হামলার ঘটনায় ঢাবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমানউল্লাহ আমানসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। এই হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে ছাত্রদলের নেতারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রনিকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং তাদের মুক্তির দাবিতে সকাল ১০টায় শহিদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রদল। মিছিলটি শেখ রাসেল টাওয়ার অতিক্রম করে শহিদ রুমি ভবনের সামনে এলে মোটরসাইকেলে আসা একদল লোক হেলমেট পরে স্ট্যাম্প ও বাঁশ নিয়ে মিছিলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় হামলাকারীরা মিছিলের ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাবির সাংবাদিক সমিতিতে (ডুজা) সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম বলেন, রোববার সকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেলের মহড়া দিয়ে দেশি অস্ত্র, লাঠি, স্ট্যাম্প, বাঁশ দিয়ে আমাদের ওপর বিনা কারণে হামলা করেছে। আমরা এর নিন্দা জানাচ্ছি এবং উপাচার্য ও প্রক্টর বরাবর আবেদন জানাচ্ছি যে, তদন্ত সাপেক্ষে যেন দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া আদায়ের জন্য ছাত্রদল ক্যাম্পাসে কাজ করছে। কিন্তু এই কাজ করতে গিয়ে আমরা বারবার ছাত্রলীগের হামলার শিকার হচ্ছি। আর এটা প্রমাণ করে যে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করুক সেটা ছাত্রলীগ চায় না। তবে আমরা বলে দিতে চাই, ভবিষ্যতে যদি এই ধরনের ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয় তাহলে এর সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এই হামলায় প্রায় ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এরা হচ্ছেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম খান আনিক, খোরশেদ আলম সোহেল, হাসান আল আরিফ, এবিএম ইজাজুল কবির রুয়েল, শরীফ প্রধান, আরিফুল ইসলাম, এনামুল হক এনাম ও মাহামুদুল হাসান রনি, আহ্বায়ক সদস্য এসএম দিদারুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম আরিফ, ফারহান আরিফ, নাসির উদ্দিন শাওন, বায়োজিদ, হাজী মুহম্মদ মহসিন হল ছাত্রদলের সভাপতি ওমর ফারুক মামুন, শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রদলের সভাপতি গাজী সাদ্দাম হোসেন, ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রদলের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ্, সূর্যসেন হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবু হান্নান তালুকদার, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের সহসভাপতি আলমগীর হোসেনসহ অনেকে।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন সংবাদিকদের বলেন, ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের ঘাতকদের যারা উত্তরাধিকারী, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা যাদের একমাত্র রাজনৈতিক অ্যাসাইনমেন্ট এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে যারা রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি হাসিল করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ জানাবে, এটাই স্বাভাবিক। সাধারণ শিক্ষার্থীরা কারা? জানতে চাইলে সাদ্দাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হিসাবে সবার একটি পরিচয় রয়েছে। আগস্ট মাসে এই ঘাতকদের শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই স্বাগত জানাতে পারে না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দায় চাপানো হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিক অঙ্গীকার পূরণ করেছে।