তথ্য গোপন করে করোনাভাইরাসের মহামারী এড়ানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সরকারের তথ্য গোপন নীতির কারণেই দেশের করোনা পরিস্থিতির আসল চিত্র ফুটে উঠছে না।
ভেতরে ভেতরে সংক্রমণ হতে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে। বরং সঠিক তথ্য দিয়ে এ রোগের ভয়াবহতা বুঝিয়েই জনগণকে কোয়ারেন্টিন মেনে চলতে অনুপ্রাণিত করতে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ, সুরক্ষা ও প্রতিকারে সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য দিয়ে মানুষের আস্থা তৈরি করা উচিত।
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সরকারের ‘তথ্য গোপন পলিসি’র সমালোচনা করার কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কয়েকদিনে বিএনপির ১২ নেতাকর্মী ও চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে রোগের পরীক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে দেশে পরীক্ষা নিয়ে নানা জটিলতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী কিংবা সরকারি পরিসংখ্যানের আপডেট এখন কেউ আর বিশ্বাস করছে না। অন্ধ হলেই কি বন্ধ হবে প্রলয়!
রিজভী বলেন, পরীক্ষা বাড়ানোর পাশাপাশি লকডাউন ও কোয়ারেন্টিনকে গুরুত্ব দিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা, হঠাৎই বাড়তে পারে ভয়াবহতা। সেক্ষেত্রে লকডাউন চালিয়ে যাওয়া, আরও বেশি বেশি টেস্ট করে পজেটিভ রোগী খুঁজে আইসোলেশনে নিয়ে আসা কাজে আসতে পারে।
‘এ সংকটময় সময়েও বিএনপির নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি, তারা সরকারের সমালোচনা করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অপতৎপরতায় লিপ্ত’- বুধবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের সমালোচনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, কাদের সাহেবকে বলতে চাই, গণতন্ত্রকে জাদুঘরে পাঠিয়েছেন বলেই সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরাকে অপতৎপরতা হিসেবে অভিহিত করছেন। আপনাদের গণতান্ত্রিক মানস নেই বলেই সমালোচনা শুনলেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এ মহাদুর্যোগে যখন মানুষ জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে তখন ওবায়দুল কাদের সাহেবের বক্তব্য বিভাজন ও বিভেদেরই প্রতিফলন।
যখন করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হল তখন আমরাই রাজপথে নেমেছি, সারা দেশের সর্বত্র প্রথম সচেতনতা শুরু করেছি। আমরা ও আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ দুঃসময়ে দেশের সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, শ্রেণি-পেশার সংগঠন অর্থাৎ সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা করার প্রথম আহ্বান জানিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ২৬ মাস বিনা দোষে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল। তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়েছে। তিনি গুলশানের নিজ বাসায় অবস্থান করছেন। এমতাবস্থায় তার নিরাপত্তার জন্য চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আইজিপি বরাবর আবেদন করলেও এ বিষয়ে এখনও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশের আইজিপির কাছে অনুরোধ করছি।
সুত্র-যুগান্তর