গাংনী উপজেলার নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহার নিকট তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে এখন আতংকের মধ্যে রয়েছেন আবেদনকারী সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ। ইউএনও প্রীতম সাহা এখন সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেছেন এবং নানাভাবে সায়েস্তার পাশাপাশি হয়রানি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এঘটনায় সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের দফতরে আবেদন করেছেন। বিষয়টি তিনি বিভাগীয় কমিশনারকে সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।
বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লেখা আবেদনে সাংবাংদিক ফয়েজ আহমেদ বলেন, গত ১৩ মার্চ খ্রিঃ তারিখে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ এর ০৮ ধারা অনুযায়ী গাংনী উপজেলা প্রশাসনের কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্য চেয়ে আমি আবেদন করেছিলাম। সে আবেদনের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তথ্য দেননি উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা। তথ্য না পেয়ে বিধি অনুযায়ী আমি গত ১৫ মে তারিখে মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কাছে আপিল করি। আপিল সুনানি করে আপিল কতৃর্পক্ষ কোনো আদেশ দেননি। আপিল কর্তৃপক্ষ না দেওয়ায় বিধি অনুযায়ী ২৮ জুন প্রধান তথ্য কমিশনার বরাবর অভিযোগ দায়ের করি। প্রধান তথ্য কমিশনার বরাবর অভিযোগ দায়ের করার পর থেকেই গাংনী উপজেলা নির্বাহী আফিসার প্রীতম সাহা জানতে পেরে তথ্য না দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত ভাবে মিথ্যা মামলায় আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩ জুলাই তারিখে রাত ১১ টার সময় গাংনী থানার একজন এসআই কে আমার গ্রামের বাড়ি বাঁশবাড়ীয়া দক্ষিণপাড়াতে মাদ্ররাসার খোঁজ খবর নেওয়ার নাম করে আমাকে ধরতে পাঠিয়েছিলেন। ওইদিন আমি গ্রামের বাড়িতে না থাকায় উপজেলা নির্বাহী আফিসারের অপকৌশল কাজে লাগাতে না পেরে। উপজেলা নির্বাহী আফিসার প্রীতম সাহা আমাকে তথ্য না দিয়ে আমার স্বাক্ষর নানা তালবাহানা শুরু করেন। এক পর্যায়ে আমাকে তথ্য দিয়েছেন এবং আমি বুঝে পেয়েছি এমন একটি ভূয়া কাল্পনিক প্রাপ্তী শিকারপত্র তৈরী করেছেন।
তিনি আমাকে তথ্য দিয়েছেন আর আমি তথ্য বুঝিয়া পেয়েছি এমন একটা মিথ্যা প্রাপ্তি শিকার ও আমি তথ্য চেয়ে উপজেলা নির্বাহী আফিসার বরাবর যে আবেদন করেছিলাম ওই আবেদনটি প্রত্যহার করছি এমন একটি চিঠি উপজেলা নির্বাহী আফিসার লিখে আমার সাক্ষর নেওয়ার জন্য গত ৫ জুলাই ৩ জন জনপ্রতিনিধিকে আমার মেহেরপুর শহরের ভাড়া করা বাসায় পাঠিয়েছিলেন। ওই ৩ জন জনপ্রতিনিধি আমার সাক্ষর নেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ জোর জুলুম করেছিলেন। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী আফিসার পাঠানো ২টি আবেদনে আমি সাক্ষর করিনি। উপজেলা নির্বাহী আফিসারের পাঠানো প্রাপ্তি স্বীকার আবেদনে আমার স্বাক্ষর কেউ যদি নকল করে করে উপজেলা নির্বাহী আফিসারের কাছে দিয়ে থাকে তাহলে সেই প্রাপ্তি স্বীকার ও আবেদনটি গ্রহণ না করার জন্য আবেদন করছি।
এদিকে ফয়েজ আহামেদ আরও বলেন, প্রীতম সাহা সরকারের তথ্য অধিকার আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে আমাকে মামলায় ফাঁসানোর জন্য বিভিন্ন অজুহাত তৈরী করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি নিজে ও অন্য এক ব্যক্তিকে দিয়ে গাংনী থানায় আমার নামে মিথ্যা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বলে জানতে পেরেছি। ইউএনও প্রীতম সাহার কাছ থেকে তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করে আমি এখন প্রাণভয়ে শংকিত রয়েছি।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে সরকারি বরাদ্দের বিভিন্ন তথ্য চেয়ে আবেদন করাই প্রীতম সাহা তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন। ফয়েজ আহমেদ অভিযোগ করেন তথ্য না দিয়ে এখন নানাভাবে হয়রানি ও বেকায়দায় ফেলার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ইউএনও প্রীতম সাহা।
এদিকে এ বিষয়ে মতামত জানতে গতকাল সন্ধ্যায় মেহেরপুর প্রতিদিন কার্যালয় থেকে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।