করোনাকালিন সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও করোনা প্রতিরোধের কারনে সরকারি লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা হয়েছে হাত ধোয়া বেসিন। যথাযথ দেখভালের অভাবে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এইসব বেসিনগুলো। সাবান পানি সংকটে ভুগছে অধিকাংশই। কোন কোন বেসিনে পড়েছে ময়লার স্তুপ ব্যবহার হচ্ছে ডাস্টবিন হিসেবে।
জানা গেছে, করোনা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় গত জুন মাসের শেষের দিকে ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৯টি হাত বেসিন নির্মান করে মেহেরপুর জনস্বাস্থ্য বিভাগ। তিন মাস যেতে না যেতেই বেহাল দশা সব গুলোর। কোনটাই পানি আছে তো সাবান নেই, আবার কোনটাই টুকরো করা সাবান থাকলেও নেই পানির ব্যবস্থা। জন সাধারণ চাইলেও ব্যবহার করতে পারছেনা বেসিন গুলো। হাতে গোনা দুয়েকটা মোটামুটি ব্যবহার হলেও পরিত্যক্ত বাকি গুলো। ফলে যে উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করছে তা পুরণ হচ্ছে না।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ২০১৯-২০ অর্থবছরে জনস্বাস্থ্য প্রকোশল অধিদপ্তর, মেহেরপুর জেলা ও বিভিন্ন উপজেলায় হ্যান্ড ওয়াশ বেসিন নির্মানের উদ্যোগ নেয়। ইতিমধ্যে জেলায় ১৯ টি নির্মানকাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সিভিল সার্জন অফিস, পুলিশ লাইন, সদর থানা, সদর হাসপাতালে, মেহেরপুর ডায়বেটিক হাসপাতাল, গড় মসজিদ, মা ও শিশু কল্যাণ হাসপাতালে, ডিপিএইচই অফিস, মেহেরপুর আইনজীবি সমিতির অফিস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও সাব-রেজিষ্ট্রি কার্যালয়ে ১টি করে বেসিন নির্মান করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী।
গাংনীতে উপজেলা পরিষদে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, বাসস্ট্যান্ড বাজারে ১টি করে বেসিন নির্মান করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী। মুজিবনগরে উপজেলা পরিষদে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও মুজিবনগর থানায় ১টি করে নির্মান করা হয়েছে। এছাড়াও গাংনী পৌরসভায় আরও ৫টি নির্মান কাজ চলমান রয়েছে।
এইসব বেসিন গুলো স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানসহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের দেখভাল করার দায়িত্ব। প্রথম পর্যায়ে বেশ তদারকি থাকলেও এখন তেমন একটা তদারকি নেই। ফলে সরকারি অর্থায়নে তৈরি করা বেসিন গুলো প্রায় অচলাবস্থা।
মুজিবনগর প্রতিনিধি শাকিল রেজা জানান, মুজিবনগরে ৩টি বেসিন নির্মান করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মেহেরপুর। এর মধ্যে থানায় যেটি নির্মান করা হয়েছে সেটা মোটামুটি ব্যবহারে হলেও উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেসিন অচল অবস্থায় পড়ে আছে। মুজিবনগরে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে বলে এই বেসিন গুলো তেমন ব্যবহার হচ্ছে না ।
মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন সরকার জানান, এটা দেখভাল করার দায়িত্ব আমাদের সবার। বিষটি আমার নজরে ছিল না। আমি এটি ব্যবহার যোগ্য করার ব্যবস্থা নিচ্ছি।
গাংনী প্রতিনিধি আক্তারুজ্জামান জানান, গাংনীতে জনস্বাস্থ্য প্রকোশলীর নির্মান করা ৩টি বেসিনই অচল হয়ে পড়ে আছে। সাবান-পানির অভাবে চাইলেও ব্যবহার করতে পারছে না অনেকেই। এছাড়াও আরও তিনটি বেসিন নির্মান কাজ চলমান রয়েছে। যেগুলো নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মান করা হচ্ছে। প্রতিটির জন্য বরাদ্দ প্রায় ৩০ হাজার করে হলেও অর্ধেক খরচে বানাচ্ছে ঠিকাদার।
এ বিষয়ে মেহেরপুর জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আলী জানান, বেসিন গুলো তদারকি করার দায়িত্ব স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানসহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়েরও। আমরা আরও চাহিদা দিয়েছি অল্পদিনের মধ্যে আরও কিছু বেসিন নির্মান করা হবে। আমরা সব গুলোই তদারকি করছি।