মেহেরপুরে গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে মৃদু শৈত প্রবাহ। কনকনে ঠান্ডা ও হিমেল হাওয়াতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বুধবার দুপুর পৌনে তিনটা পর্যন্ত সূর্যের দেখাও মেলেনি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না সাধারণ মানুষ। বিদ্যালয়গামী কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও পড়েছে বিপাকে।
আজ বুধবার (১৭ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে সকাল ৬ টা ও ৯ টার সময় মেহেরপুর জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা বিচারে এটা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
শৈতপ্রবাহ ও তাপমাত্রার ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে স্কুল-কলেজ ও প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশনা রয়েছে মন্ত্রণালয়ের। তবে এ নির্দেশনা মানা হয়নি মেহেরপুর জেলায়। প্রজ্ঞাপনে অস্পষ্টতা, জেলাতে অবহাওয়া অফিস না থাকা এবং মোবাইল এপ্সের উপর নির্ভরতা এর প্রধান কারণ বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) গত ১৬ জানুয়ারী মঙ্গলবার বলেছিল, যেসব জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামবে, সেসব জেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা হবে। আবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিদ্যালয়-২) মোহাম্মদ কবির উদ্দীনের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে কোনো জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যদি ১০ ডিগ্রির নিচে নামে, সেক্ষেত্রে সেই জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকলেও বন্ধ হয়নি মেহেরপুরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। এমনকি চলেছে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাও। মেহেরপুরে আবহাওয়া অফিস না থাকাতে মোবাইল অ্যাপসে প্রদর্শিত তাপমাত্রার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এই অবস্থা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
মেহেরপুর শহরের জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল এণ্ড কলেজে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলে প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। সকাল ৭ টা থেকে শিফট ভিত্তিতে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত শ্রেণী পাঠদান চালানো হয়। শিক্ষার্থীদের কষ্ট বুঝতে পেরেও জেলা শিক্ষা অফিস থেকে কোন নির্দেশনা না দেওয়ায় তারা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে পারছে না। একই অবস্থা জেলার অন্যান্য বিদ্যালয়গুলোরও।
ওই প্রতিষ্ঠানের উপাধাক্ষ সামসুর রহমান টুটুল জানান, অতিরিক্ত শীতে শিক্ষার্থীদের কষ্ট হচ্ছে। তবুও জেলা শিক্ষা অফিস থেকে কোন নির্দেশনা না দেওয়ায় ছুটি দেওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিনের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার কল দিলেও তিনি কল ধরেননি।
মেহেরপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্বাস উদ্দিন বলেন, ‘সকালে মোবাইল এপসে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস দেখানোতে বিষয়টি আমরা জেলা প্রশাসকের অবহিত করি। জেলা প্রশাসকের পরামর্শে বিদ্যালয় খোলা রাখা হয়। তবে কিছু জায়গায় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলছে, সেক্ষেত্রে বেলা ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি সাপেক্ষে দেরিতে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।