সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রংতুলি হাতে মাঠে নেমেছে ময়মনসিংহের তিন প্রজন্মের শিল্পী সমাজ। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের শেকড় ময়মনসিংহের পুরনো ব্রহ্মপুত্র পাড়ের জয়নুল উদ্যানের ভেতর দিনব্যাপী এই আয়োজনে শিল্পীরা রং তুলির আঁচড়ে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়।
‘দেশ আমার, সিদ্ধান্ত আমার -নির্ভয়ে চলো বাংলাদেশ, এমন স্লোগানে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী শিল্পী সমাজ শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র পাড়ের জয়নুল আবেদীন উদ্যানের বৈশাখী মঞ্চে জাতীয় সংগীত এর মাধ্যমে শুরু করে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার। ক্ষুদে শিল্পীদের চিত্র অংকন প্রতিযোগিতা আর তিন প্রজন্মের শিল্পীদের চিত্র প্রদর্শনীতে রং তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হয় সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আগ্রাসনের ভয়াবহতা। চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও শিল্পীদের চিত্র কর্ম প্রদর্শন ছাড়াও দিন ব্যাপী এ আয়োজনের মধ্যে ছিল কবিতা পাঠ, নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাম্রাজ্যবাদ রুখে দেয়ার এমন আয়োজনের যুক্ত হতে পেরে খুশি শিল্পীরা।
আয়োজক কর্মী আমিনুল হাসান লিটু জানান, বাংলাদেশ ও বিশ্বরাজনীতিতে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মোড়ল সেজে নির্লজ্জভাবে খবরদারি করার অপচেষ্টা এবং নানা দেশের যুদ্ধে মানবিক বিপর্যয়ে ক্ষুব্ধ চারুশিল্পীরা। বাংলাদেশ তৃতীয়-বিশ্বভুক্ত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পর থেকেই সাম্রাজ্যবাদীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। তারা সংঘবদ্ধভাবে এদেশের প্রতিটি কাজে, প্রতিটি সিদ্ধান্তে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করছে, বাধা প্রদান করছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে জয়নুল-কামরুলের অনুসারী চারুশিল্পীরা দেশ এবং মানুষের কল্যাণে রং-তুলি-ক্যানভাস নিয়ে পথে নেমেছে।
সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী শিল্পী সমাজ ময়মনসিংহের সভাপতি মোহাম্মদ রাজন বলেন, চারুশিল্পীদের একটি জাতীয় মোর্চার পক্ষ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে শিল্প শিরোনামে দেশ আমার, সিদ্ধান্ত আমার, নির্ভয়ে চলো বাংলাদেশ শ্লোগানে প্রতিবাদী শিল্পকর্ম আঁকা ও শিল্পকর্মের প্রদর্শনীসহ নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় চারু শিল্পী পর্ষদের সভাপতি মোহাম্মদ রাজন জানান, নতুন ও তরুণ প্রজন্মসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরোধী জনমত গড়ে তুলতেই এই আয়োজন।
রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহর বরিশালের পর ময়মনসিংহে শুক্রবারের এই আয়োজনে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের সৈনিক দুই শতাধিক ক্ষুদে শিল্পী ছাড়াও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিল্পীসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহের নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর ও ময়মনসিংহের শতাধিক শিল্পী অংশ নেয়।