প্রযুক্তির কল্যাণে আজকে আমরা উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছি আর দেশে বসেই বিদেশের নামি-দামি কোম্পানি সঙ্গে কাজ করতে পারছি। সেইসঙ্গে খুব ভালো মানের সম্মানীও পাওয়া যাচ্ছে। আর এই সমস্ত কিছুর পিছনে যে প্রফেশন উল্লেখ্য যোগ্য তা হলো ফ্রিল্যান্সিং।
ফ্রিল্যান্সিং বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত পেশা, যার মাধ্যমে একজন দক্ষ লোক যেকোনো জায়গা থেকে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। আমাদের শিক্ষিত সমাজ অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন ৬-৭ বছর আগেও তেমন দেখিনি।
কিন্তু বর্তমানে এখন এটা সম্মানজনক পেশায় পরিণত হচ্ছে। সঠিক ধারণা ও জ্ঞান থাকলে যে কেউ তৈরি করে নিতে পারে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। আপনি যদি অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তা করে থাকেন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু বিষয় আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। কঠোর পরিশ্রম, কাজের যোগ্যতা এবং ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা। এ বিষয়গুলো নিয়ে একটু ভালোভাবে আলোচনা করা যাক।
কঠোর পরিশ্রম
পরিশ্রম সাফল্যর চাবি কাঠি এ কথা সবার জানা আছে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে আপনাকে ঠিক এই কাজটিই করতে হবে। মানে সফলতার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে দ্বিতীয় সুযোগ বলে কিছু নেই। একটু অলসতার কারণে কাজ একটু খারাপ হয়েছে, এসব বলে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আপনাকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেয়া হবে না। কারণ অনেক অভিজ্ঞ লোক বসে রয়েছে নির্ভুলভাবে কাজ করে দেয়ার জন্য। সেক্ষেত্রে আপনার ক্লায়েন্ট অভিজ্ঞদের মধ্য থেকে কাউকে সুযোগ দিবে। কারণ আপনি তার আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।
আপনাকে মনে রাখতে হবে, আপনি ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটের একজন প্রতিযোগী। আবার মাঝে মাঝে একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সারকে টানা ১৫ ঘণ্টার বেশিও কাজ করতে হয়। এই ধরনের চাপের মধ্যে কাজ করার মনোবল থাকতে হবে।
যোগ্যতা
ফ্রিল্যান্সিংয়ে ক্লায়েন্টরা “মনে হয় পারবো” এ ধরনের মতবাদে বিশ্বাসী নয়। আপনার কাছে তারা দুইটি উত্তর শুনতে চাইবে, “হ্যাঁ” অথবা “না”। হ্যাঁ উত্তর আপনি তখনই দিতে পারবেন, যখন আপনার যোগ্যতায় কোনো ঘাটতি থাকবে না এবং আপনি আত্মবিশ্বাসী হবেন।
ব্যক্তিগত মত থেকে যোগ্যতা প্রসঙ্গে যদি বলতে যাই, তাহলে বলতে হবে কম্পিউটারের সঙ্গে জড়িত এ রকম কিছু সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করাই ভালো। কারণ এতে করে আপনি আপনার মেধা সারা বিশ্বে সহজেই তুলে ধরতে পারবেন।
আমাদের দেশে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখান থেকে আপনি কম্পিউটার বিষয়ে ভালো দক্ষতা অর্জন করার সুযোগ রাখেন। তবে অবশ্যই আপনাকে মাথায় রাখতে হবে, একটি প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র পথপ্রদর্শকের ভূমিকা রাখে, চলতে হবে আপনাকে নিজের যোগ্যতাতেই। এছাড়াও গুগল থেকে বিভিন্ন বিষয় বিষয়ে সার্চ করে আপনি আপনার দক্ষতা বাড়াতে পারেন।
ইংরেজিতে দক্ষতা
ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা থাকা আবশ্যক। যেহেতু ফ্রিল্যান্সিংয়ে বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট বিদেশি, সেহেতু তাদের সঙ্গে ইংরেজিতেই আপনাকে কথোপকথন করতে হবে। ক্লায়েন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা না করতে পারলে আপনি কোন কাজই সফলভাবে করতে পারবেন না। কারণ আপনি তার কাজের দরকারি জিনিসগুলো বুঝতে পারবেন না। ইংরেজিতে কথা বলতে এবং লিখতে, দুটোতেই আপনাকে পারদর্শী হতে হবে।
সাধারণত একজন সফল ফ্রিল্যান্সার একটা সময় পরে উদ্যোক্তা হতে পারে। কারণ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে গিয়ে একজন উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য সকল বৈশিষ্ট্য লাগে। আর এই যোগ্যতা তার মধ্যে তৈরি হয়ে যায়। তাই একজন দক্ষলোক ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে নিজের ভবিষ্যৎ খুব সহজেই তৈরি করে নিতে পারেন।
লেখক: মো. ওমর ফারুক, ফ্রিল্যান্স ই-কমার্স প্রোডাক্ট ম্যানেজার
সূত্র-যুগান্তর