চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ধান্যঘরা গ্রামে নির্মমভাবে মেছো বিড়াল হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে বাকি দুইজন এখনো পলাতক রয়েছে।
তিন যুবক মিলে ট্যাটা (ফালা) দিয়ে আঘাত করে বন্যপ্রাণীটি হত্যা করে, যা মোবাইলে ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি জানাজানি হলে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৫টার সময় কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ধান্যঘরা গ্রামে মানিকদোয়া রাস্তার পাশে মোঃ আলমগীর হোসেন (৩০) (পিতা: শহিদুল ইসলাম), মিন্টু (পিতা: হারুন কাল্টা) এবং মোঃ সাইফুল ইসলাম (পিতা: ইমান আলী) মিলে একটি মেছো বিড়ালকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
তারা ট্যাটা (ফালা) দিয়ে আঘাত করে বন্যপ্রাণীটিকে হত্যা করে এবং সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে।
পরবর্তীতে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা এই নির্মম ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। তারা আশা করছেন, দোষীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ যেন আর না ঘটে, সে জন্য প্রশাসন আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ০৪নং কুড়ুলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের ০৪নং ওয়ার্ডের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ্ মোঃ ফরহাদ হোসেন ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা বন কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।
এরপর শনিবার (২২ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), উপজেলা বন কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনগণের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থলের পাশে মেছো বিড়ালটি দাফন করা হয়।
একই সময়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মোঃ আলমগীর হোসেন (৩০) কে গ্রেপ্তার করে। তবে বাকি দুই আসামি মিন্টু ও সাইফুল ইসলাম এখনো পলাতক রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিথি মিত্র বলেন, “বন্যপ্রাণী হত্যা একটি গুরুতর অপরাধ। এই ধরনের নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
উপজেলা বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা এখনো পলাতক রয়েছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।”
উল্লেখ্য, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ অনুযায়ী, কোনো বন্যপ্রাণী হত্যা বা ক্ষতি করলে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
পুলিশ ইতোমধ্যে একটি মামলা দায়ের করেছে এবং পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে। এদিকে, পরিবেশবাদী ও প্রাণীপ্রেমীরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।