চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় প্রতিষ্ঠিত একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরুজ চিনিকল কমপ্লেক্স। এ প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন জায়গা থেকে কর্মকর্তরা কেরু চিনিকলে আসার জন্য লবিং করে থাকে। সেই সুবাদে কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর মহাব্যাবস্থাপক কারখানার ইনচার্জ সুমন কুমার সাহা আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে উপর মহলের নির্দেশে কেরু চিনিকলে আসে। দীর্ঘ ৪ বছর চাকুরীর বয়স হলেও নবাগত ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসানের সাথে গড়ে তুলেছেন গভীর সখ্যতা। হঠাৎ করে কি কারনে এ গভীর সখ্যতা গড়ে উঠলো তা নিয়ে বইছে আলোচনা সমালোচনা ঝড়।
এ বিষয়ে সরজমিনে গেলে দর্শনা কেরুজ চিনিকলের ফ্যাক্টারীতে বিভিন্ন কাজের জন্য বছরে প্রায় কোটি টাকার মালামাল ক্রয় করা হয়ে থাকে। অভিযোগ রয়েছে কিছু কর্মকর্তা একই জায়গায় দীর্ঘদিন চাকুরী করার সুবাদে ফ্যাক্টারীর মালামাল সাপলাই দেয়া ঠিকাদারের সাথে গড়ে তুলেছেন সখ্যতা। এতে চিনিকলের ক্ষতি হলেও ব্যাক্তিগত ভাবে লাভবান হয়ে থাকেন দেখভাল করা কর্মকর্তারা। দুর্নীতি করা কর্তাকর্তাদের তালিকায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন মহাব্যবস্থাপক কারখানা সুমন কুমার সাহা, মেক্যানিকেল ইঞ্জিনিয়ার ইসমাইল হোসেন, ডিজিএম তড়িৎ প্রবীরচন্দ্র সাহা, প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ, সহকারী ব্যবস্থপক যান্ত্রীক কৌশল নাজমুল হাসান ও ডিজিএম উৎপাদন জাহিদুল হক টুটুলের ও সহকারী মহাব্যবস্থাপক নৃরুল হাসানের নাম। বেতনের পাশাপাশি অনৈতিক সুবিধা থাকায় ঘুরেফিরে এসব কর্মকর্তারা এ চিনিকলটিকেই বেঁচে নিয়েছেন। ফলে পতন হওয়া স্বৈরশাসকের সুপারিশ প্রাপ্ত কর্মকর্তারা স্বৈরশাসকের এজেণ্ডা বাস্তবায়ন করতে সুকৌশলে কাজ করে যাচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, দেশের চিনি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর্শনা কেরুজ চিনিকল এশিয়া মহাদেশের ভিতরে দ্বীতীয় অন্যান্য চিনি কলের শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মাস শেষে বেতন পাওয়া অনিশ্চয়তা থাকলেও দর্শনা কেরুজ চিনকলে মাসের এক তারিখ আসার আগেই বেতনসহ সকল সুযোগ সুবিধা ব্যাংক একাউন্টে ঢুকে যায়। বেতনের নিশ্চয়তা থাকায় তদবির করে অনেক কর্মকর্তা ঘুরে ফিরে এ চিনিকলে পৌষ্টিং নিয়ে আসেন।
তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ফ্যাক্টারী ম্যানেজার সুমন কুমার সাহা, মেক্যানিকেল ইঞ্জিনিয়ার ইসমাইল হোসেন, ডিজিএম তড়িৎ প্রবীরচন্দ্র সাহা, প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ, সহকারী ব্যবস্থপক যান্ত্রীক কৌশল নাজমুল হাসান ও ডিজিএম উৎপাদন জাহিদুল হক টুটুলের নাম। ঘুরে ফিরে তারা দীর্ঘদিন ধরে এ চিনিকলে চাকুরী করছেন। অভিযোগ রয়েছে একই জায়গায় চাকুরী করার সুবাদে বিভিন্ন দুর্নিতির সাথে জড়িয়ে পড়েছেন তারা। স্বৈরাশাসকের অবসান হবার পর দুর্নিতির কারণে অনেক কর্মকর্তার পৌস্টিং চাকুরী চ্যুতি হলেও স্বৈরাশাসকের সুপারিশ প্রাপ্ত এসব কর্মকর্তারা বহাল তবিয়তে স্বপদে বহাল রয়েছেন।
এদের মধ্যে ৪ বছর ধরে মহাব্যবস্থাপক কারখানা সুমন কুমার সাহা, সাত বছর ধরে সহকারী ব্যবস্থপক যান্ত্রীক কৌশল নাজমুল হাসান, দু’দফায় আট বছর ধরে ডিজিএম উৎপাদন জাহিদুল হক টুটুল ও সহকারী মহাব্যাবস্থাপক নুরুল হাসান। দর্শনা কেরুজ চিনিকলে চাকুরী করছেন। ফ্যাক্টারী ম্যানেজার সুমন কুমার সাহা বলেন, প্রতি বছর ফ্যাক্টারীতে প্রায় ২ কোটি টাকার মালামাল ক্রয় হয়ে থাকে। যে সব মালামাল বিভিন্ন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করে থাকেন। দীর্ঘদিন একই জায়গায় চাকুরী করার সুবাধে এসব কর্মকর্তরা সরবরাহকৃত নিম্নমানের মালামাল এবং পরিমানে কম থাকলেও বিশেষ সুবিধা নিয়ে এসব মালামাল ছাড় করিয়ে দিয়ে থাকেন বলে গুঞ্জণ রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠনের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। সহকারী মহাব্যবস্থাপক নুরুল হাসানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে কেরুর গোপনীয় কাগজপত্র পাবলিকদের কাছে দেওয়া এবং সাংবাদিকদের সাথে মাঝে মাঝে বাজে মন্তব্য করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আর মেরামতের কাজে ৭০ ভাগ মালামাল সদর দপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করে থাকেন। এদিকে স্বৈরসরকারের আমলে এসব কর্মকর্তারা বীরদর্পে রাজনীতির পাশাপাশি চাকুরী করে আসছেন।
কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর নাম প্রকাশে অস্বীকৃতী জানালে এক শ্রমিক বললেন দীর্ঘদিন ধরে একজায়গায় চাকুরী করলে দুর্নীতি যেমন বাড়ে তেমনি সবার সাথে সখ্যতা বাড়ে।তিনি আরও বলেন, কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর কারখানার বড় বড় লাট দীর্ঘদিন হলে জং ধরে যায় তখন চেন্জ করা লাগে।ঠিক তেমনি এসব কর্মকর্তরা দীর্ঘদিন ধরে আছে তাদের কে চেন্জ করলে কিছুটা দুর্নীতি কমবে বলে তিনি জানান। এখন সুরপাল্টে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে পরিচালিত করছেন বলে গুঞ্জণ শোনা যাচ্ছে। ঢাকা সদর দপ্তরকে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে ফ্যাক্টারীতে চাকুরীরত স্বৈরশাসকের দোষর এসব কর্মকর্তার দ্রুত বদলির দাবি তুলেছে বিপ্লবি জনতা।
এ বিষয়ে কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান বলেন,বিষয়টি সদর দপ্তর দেখেবেন,আমি নতুন এসেছি বিষয়গুলো আমি খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিব।