দামুড়হুদা জয়রামপুর রেল ইস্টিশনে সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেনের আপ ডাউন স্টোপেজের দাবীতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা ৪ টার সময় এই মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
দামুড়হুদা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেল স্টেশনে সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেনের আপ ডাউন স্টোপেজের দাবিতে স্থানীয়রা মানববন্ধন করেছে। তারা সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেন যেনো স্টপেজ দেয় সেজন্য অসংখ্য মানুষ জয়রামপুর রেল স্টেশনে বিভিন্ন প্লেকার্ড নিয়ে ট্রেন থামানোর উদ্দেশ্যে অবস্থান নেয়।
সংবাদ শুনে দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কে এইচ তাসফিকুর রহমান, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি হুমায়ূন কবির ও সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন। শেষ পর্যন্ত স্থানীয়দের সামাল দিতে দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ, সেনাবাহিনী ও এসিল্যান্ড ঘটনাস্থলে মানববন্ধনের শেষ পর্যন্ত অবস্থান করে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমাদের জয়রামপুর রেল স্টেশন জেলার একটি পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী রেল স্টেশন। রাজশাহী মেডিক্যাল সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যাতায়াতের জন্য এই স্টেশনে যেনো সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ আপ ডাউন ট্রেন থামানো হয়। এখানে স্টোপেজের দাবীতে আমরা আজ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। এই লাইনে প্রথম গেদে থেকে জগতী ইস্টেশন পর্যন্ত রেল যোগাযোগ চালু হয়। তখন থেকেই এই জয়রামপুর ইস্টিশন চালু ছিলো। কিন্তু বর্তমানে এই স্টেশন টি প্রায় বন্ধ হবার উপক্রমে আছে, বলতে গেলে এখন জয়রামপুর ইস্টিশন বন্ধ আছে। আমদের দাবী এই স্টেশন টি অতি তাড়াতাড়ি যাতে চালু হয় আমরা জনগণ সেই দাবী জানান।
সাবেক সেনা সদস্য লাজিব আক্তার সিদ্দিকী বলেন, ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেল স্টেশনে আগে স্টেশন মাস্টার ছিল, স্টাফদের থাকার জায়গা ছিল, গেটম্যান ছিল। এখান এখানে আর কিছুই নাই স্টেশনটি বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা চাই স্টেশনটি আবার নতুন করে চালু করা হোক এবং সাগরদাড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেনের আপ এবং ডাউন স্টোপেজ দাবী করছি। এখানে যেন আগের মত স্টেশন মাস্টার এবং গেটম্যান সহ সকল বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সুবিবেচনায় দেখবেন এমনটি আশা করেন।
জয়রামপুর মানবকল্যান যুব সংগঠন এর সভাপতি মোঃ মনিরুল ইসলাম মিলন বলেন, ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেল স্টেশনে গেট ম্যান না থাকার কারণে বেশ কয়েকটি তাজা প্রাণ-অকালে ঝরে গেছে। এই স্টেশনটিতে স্টেশন মাস্টার সহ কোন লোকজন নেই। কিন্তু এক সময় এই ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেল স্টেশনে ৪৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিল। কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গেছে।
১৮৬২ সালে গেদে থেকে কুষ্টিয়াজ জগতী রেললাইন চালু হয়। তখন থেকেই জয়রামপুর রেল স্টেশন জমজমাট ছিল। এই অঞ্চলে প্রায় দুই লক্ষের অধিক মানুষ এই জয়রামপুর স্টেশন ব্যবহার করতো। এখানে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর গুড়েরহাট যেখান থেকে সারা বাংলাদেশে ট্রেনের মাধ্যমে খেজুরের গুড় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হতো। স্থানীয় অর্থকরী কৃষি ফসল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ট্রেনের মাধ্যমে যেত, যা এখন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ আছে। অনতিবিলম্বে এই স্টেশনে স্টেশন মাস্টার ও গেটম্যান সহ সাগরদাড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেনের আপ এবং ডাউন স্টপেজ দাবী করছি।