দামুড়হুদা প্রেসক্লাবে চুয়াডাঙ্গা সদর সহকারী জজকোর্টের সেরেস্তাদার নূরুল হকের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ২২ জনের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রবিবার বিকাল সাড়ে ৪ টার সময় দামুড়হুদা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখত বক্তব্য পাঠ করেন খাজা আহাম্মেদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখত বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো। আমি খাজা আহম্মেদ (৫২), পিতা-মৃত-নূরবক্স মন্ডল ও ২২ জন নিম্ন স্বাক্ষরকারী গন চুয়াডাঙ্গা জেলাধীন দামুড়হুদা উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের গোবিন্দহুদা গ্রামের বাসিন্দা। আমাদের গ্রামের মৃত বরকত মন্ডল এর পুত্র নূরুল হক বর্তমানে তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর সহকারী জর্জ কোর্টের সেরেস্তাদার পদে কর্মরত। সে একজন ভূমিদস্যু, লোভী, হীনমানষিকতাপূর্ণ, মামলাবাজ ও চক্রান্তকারী ব্যাক্তি। আদালতে চাকুরীর দাপটে সে নিজ স্বার্থ সিদ্ধির পক্ষে মামলা ও জেলের ভয় দেখিয়ে গ্রামের নিরীহ ও অশিক্ষিত মানুষকে নানা ভাবে ঠকায় ও ভুল পথে পরিচালিত করে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে আশপাশ এলাকার চাষের জমির বালু ও মাটি কেটে শেষ করেছে এবং আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে গত ১৫ বছর যাবৎ ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে স্থানীয় জনগনকে কুক্ষিগত করে রাখতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে সবাইকে হয়রানি করেছে। এলাকায় তার নাম হয়ে গেছে ভূমিদস্যু ও মামলাবাজ নূরুল হক পেশকার। কেউ তার বিরুদ্ধচারণ করলে তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে মামলা দিয়ে হয়রানি করে। গ্রাম ও আশেপাশ এলাকার অনেকেই তাহার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে প্রভাব খাটিয়ে অন্যার সম্পত্তি আত্মসাৎ করা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এরকম কিছু ঘটনা নিম্নে উপস্থাপন করা হল।
১৯৯৩ সালে নূরুল হক তার ভগ্নি সুরাতন নেছাকে বাদী করে ৫৮/৯৩ বিভাগ বণ্টনের মামলা করে। উক্ত মামালায় মওলা বক্স ও তার শরীকগণ প্রতিদন্দিতা করা কালে মামলাটি নিজের অনুকূলে নেওয়ার জন্য প্রতিদন্দি কারীদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং-৩৭/২০০০, মামলাটি আদালত খারিজ করে দিলে তার নিজস্ব ক্যাডার বাহীনি দিয়ে প্রতিদন্দি ব্যক্তিদের উপর বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে জোর পূর্বক বিভাগ বন্টনের জমিজামা দখল করতে যায়। বাধা দিলে পুনরায় আবার প্রতিদ্বন্ধিদের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক চাঁদাবাজী মামালা করে। যাহার মামলা নং- সিআর ৪৯/২০০৯, ১/২০০৯, ৫৪/২০০৯, ৩৫/২০০৯, তদন্ত সাপেক্ষে আদালত এই মামলা খারিজ করে দিলে পরবর্তীতে আবারো মিথ্যা মামলা দেয়। মামলী নং-সি আর- ২০১/২০০৯, ২০৮/২০০৯, ৬৭২/২০০৯, ২৮৩/২০০৯, ফলে এক সময় মামলায় জজ্জারিত হয়ে প্রতিদ্বন্ধি কারীরা পারিবারিকভাবে নানা রকম হেনস্থা ও বঞ্চনার শিকার হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়। অপর দিকে মাহতাব হোসেন সাং-পাটাচোরা, বাদী হয়ে নুরুল হক এর বিরুদ্ধে ২২/১১/২০১২ তারিখে ১৮২/১২ একটি দেওয়ানী মামলা চুয়াডাঙ্গা জজ আদালতে রুজু করে। এই মামলাটিও যাতে চলিতে না পারে তারই প্রেক্ষিতে বাদী সহ আমাদের আত্মীয় স্বজন ভাই বোনদের নামে ও গ্রামের কয়েকজন এর বিরুদ্ধে ১৮/১২/২০১২ তারিখে একটি চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করে। যাহার নং- সি আর-৩৯০/১২, উক্ত মামলাটি দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিথ্যা বলে আদালতে রিপোর্ট দেয়। পূনরায় ১৩/০২/২০১৩ তারিখে মওলা বক্সের পুত্র ও আত্মীয় ও গ্রামের দুই জন নিরীহ লোকসহ একটি চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করে। যার জি আর নং-৪১/১৩, উক্ত মামলাটি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে তৎকালীন এসপি, এডিশনাল এসপি, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। দুঃখের বিষয় এইযে, আদালত উক্ত রিপোর্ট টি না মঞ্জুর করে পুনরায় গ্রেপ্তারী পরওয়ানা জারী করে। এই মামলায় আমরা জেল হাজতে থাকাকালীন সময়ে আমাদের ১০ বিঘা আম, মেহগনি ও শিশু বাগান কেটে নেয়।
যাহার আনুমানিক মূল্য ১৫-২০ লক্ষাধিক টাকা এবং জমি দখল করে ০৬ বিঘার উপরে মাল্টা বাগান করে। আমরা জেল থেকে জামিন নিয়ে বের হইয়া প্রতিবাদ করিলে নুরুল হক তাহার ক্যাডার বাহীনি দিয়ে আমাদের পক্ষের গোবিন্দহুদা গ্রামের মৃত-মওলা বক্সের ছেলে, মাসুদ বিল্লাহ মন্টু (৫৬), কে লোহার রড, রাম দা দিয়ে নিমর্মভাবে কুপিয়ে দুই হাত, পা রক্তাক্ত জখম করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত-০৫/০৮/২০২৪ ইং- তারিখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরচারী সরকারের পতন হলে আমরা নুরুল হকের দখল কৃত মাল্টা বাগানের ০৬ বিঘা জমি ছেড়ে দিতে বলি। সে আমাদের কথায় কোন কর্ণপাত করেনা এক পর্যায় গত-১৩/০৯/২০২৪ তারিখে রোজ- শুক্রবার নুরুল হক গ্রামের বড় মসজিদ কমিটির সভাপতি হওয়ায় গ্রামের লোকজন তার কাছে গচ্ছিত মসজিদ তহবিলের ০৬ লক্ষ টাকার হিসাব চাহিলে সে তার কাছে উক্ত টাকা গচ্ছিত আছে বলে জানায়। এই সময় মহল্লাবাসীর পক্ষে আমার ভাই জয়নুর মসজিদ তহবিলের গচ্ছিত টাকা মসজিদের একাউন্টে জমা দিতে বললে নুরুল হক ক্ষিপ্ত হয়ে তার সাথে বাকবিতন্ডাতে জড়ায়। পরবর্তীতে এরই জের ধরে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি মিথ্যা হয়রানীমূলক চাঁদাবাজী মামলার এজাহার দায়ের করে যা তদন্ত সাপেক্ষে মিথ্যা প্রমানিত হয়। নুরুল হকের দখলে থাকা মাল্টা বাগানের ০৬ বিঘা জমি উদ্ধার এর জন্য আমরা দামুড়হুদা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করিলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবির নুরুল হককে ডেকে মিমাংসা করার চেষ্টা করিবে বলে জানায়। কিন্তু মিমাংসার আগেই নুরুল হক বিজ্ঞ আমলী আদালত দামুড়হুদা চুয়াডাঙ্গায় আমি সহ আরো আমাদের ২২ জনের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করে। মামলা নং-সিআর ৫৬৬/২৪, যাহার ধারা- ৪২৭/৩৮৫/৩৬৬/৩৬৭/ও ৫০৬, যাহা বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নেওয়ার জন্য দামুড়হুদা মডেল থানাকে নির্দেশনা প্রদান করে। আমরা এই হয়রানী ও মিথ্যা মামলা থেকে পরিত্রান চায় ও নুরুল হক এর উপযুক্ত বিচার চায়।