দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় ভিটেবাড়ি বন্ধক রেখে ছেলেকে পাঠান সৌদি আরব, তাহাজুল ইসলাম বিদেশে পৌঁছানোর পর বুঝতে পারেন প্রতারকের খপ্পরে পড়েছেন দরিদ্র দিনমজুর জিন্নাত আলী। বসতঘরটিও হারিয়ে ঠাঁই তখন গোয়াল ঘরে।
জানা গেছে, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের পীরপুরকুল্লা নুরিতলা পাড়া’র জিন্নাত আলী প্রতারকের খপ্পরে পড়ে ছেলেকে সৌদি আরব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। পীরপুরকুল্লা গ্রামের হানু আলীর ছেলে আদম ব্যাপারী দালাল রফিকুল ইসলাম এর সঙ্গে ৫ লাখ ৮০, হাজার টাকায় চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা জোগাড় করতে বন্দক রাখেন জমি। ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা তুলে দেন আদম ব্যাপারী দালাল রফিকুল ইসলাম হাতে গত (২১এপ্রিল) ২০২২ তারিখে তাহাজুল ইসলামকে সৌদি আরবে পাঠিয়ে দেয়। সৌদি আরবে যাওয়ার পরে এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন সময় পরিবারের সাথে তাহাজুল ইসলাম এর কথা হয়। তার পর থেকে কোনো খোঁজ নেই। এ নিয়ে পরিবারের লোকজন আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন।স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার সালিশী বৈঠকেও মেলেনি সমাধান জানান ভুক্তভোগী বাবা জিন্নাত আলী।
তাহাজুল ইসলামের স্ত্রী মাবিয়া খাতুন বুঝতে পারার পর প্রতারণার ঘটনাটি জানানো হয় গ্রামের মুরুব্বীদের। তবে সালিশী বৈঠকেও মিললো না সমাধান। উল্টো দালালের পক্ষ থেকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছিল পরিবারটিকে। নিখোঁজ স্বামী ও টাকা ফিরে পেতে অবশেষে বিজ্ঞ আদালতে মামলা ও থানায় জিডি নং ৭২। ও বিষয়টি মৌখিকভাবে কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল করিম বিশ্বাসকে অবগত করা হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবার।
বর্তমানে পরিবারটি সর্বস্বান্ত বিষয়টির প্রতি চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের সু-দৃষ্টি কামনা করেছে বিপদগ্রস্ত তাহাজুলের পরিবার। তাহাজুল ইসলামের পিতা জিন্নাত আলী জানান, দালালচক্র যে কোম্পানীর মাধ্যমে আমার ছেলেকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছে ওখানে সে কোম্পানীর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু তাই নয়; জাল ভিসার কারণে আকামা লাগানো যাচ্ছে না বলে আমার ছেলে আমাকে বলেছিলো, তার পর থেকে দীর্ঘ পাঁচ মাস যাবত আমার ছেলের সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারছি না একমাত্র আল্লাহ জানে আমার ছেলে বেঁচে আছে কিনা মরে গেছে।
এসব দালালদের খপ্পরে পড়ে আমার ছেলের মতো এলাকার অনেক মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছে । এসব দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে আমার ছেলের মতো অনেকেই প্রতারিত হয়ে সর্বস্ব হারাবে। রফিকুল ইসলামের মতো দালালদের মুখোশ উন্মোচন হওয়া দরকার। যাতে করে আমার ছেলের মতো আর কেউ প্রতারণার শিকার না হয়।
তবে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে বারবার ফোন দিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।