“বিট পুলিশিং বাড়ি বাড়ি; নিরাপদ সমাজ গড়ি” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা জেলার অন্তভুক্ত দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের আয়োজনে উপজেলার ০৩ নং ইউনিয়নে বিট পুলিশিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
বুধবার (১৯ আগস্ট) সকাল ১২ টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় প্রাঙ্গণে বিট পুলিশিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন দামুড়হুদা, জীবননগর, সিনিয়র সহকারী সার্কেল পুলিশ সুপার মোঃ আবু রাসেল।
এসময় প্রধান অতিথি সিনিয়র সহকারী সার্কেল পুলিশ সুপার মোঃ আবু রাসেল বলেন, দ্রুত সমস্যা সমাধানে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে বিট পুলিশিং। পারিবারিক ও সামাজিক পরিম-লে যে সমস্যাগুলো আপনারা সমাধান করতে পারছেন না তা বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে আপনারা আইনগত ভিত্তির মধ্যে চলে এসে দ্রুত সমাধান পাবেন। দামুড়হুদা থানাকে ০ ৬ টি ইউনিয়নকে ৬ টি বিটে ভাগ করা হয়েছে।
প্রতিটি বিটের বিট অফিসার একজন এসআই। উনার সাথে থাকবেন একাধিক এসএসআই ও দুজন কনস্টেবল। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাথে কিছু মানুষকে জুড়ে দিয়ে কাজ করা হয়েছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের সাথে বিট পুলিশিং কার্যক্রমের কোনো সাংঘর্ষিক বিষয় নেই। বিট পুলিশিংয়ের একটি আইনগত ফ্রেমের মধ্যে আনা হয়েছে এবং পুলিশই কাজটি করবে। ছোটখাটো সমস্যাগুলো যাতে আপনারা বিটের মাধ্যমে সহজেই সমাধান পেতে পারেন। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে কোথায় যাবেন? কিভাবে যাবেন? কিভাবে প্রতিকার পাবেন? তা অনেকে জানেন না।
বিভিন্ন স্থানে ছুটাছুটি করতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়েন অনেকে। এখন আর ছুটাছটি করতে হবে না। বিটের মাধ্যমে এসব পরামর্শ ও সমস্যার সমাধান করা হবে। বিট পুলিশিংয়ের উৎপত্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমান আইজিপি মহোদয় উঁনি যখন ডিএমপি কমিশনার ছিলেন তখন তিনি ডিএমপি এলাকায় বিট পুলিশিং কার্যক্রম খুব জোরেশোরে চালু করেছিলেন। এটার ভালো ফল পাওয়া গিয়েছিলো। উঁনি চান এ ধারণা শুধু ডিএমপিতে না রেখে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে। এর অনেক সুফল আছে।
দামুড়হুদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুল খালেক বলেন, অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ জনগণকে পুলিশের সেবা নিতে অনেক পথ অতিক্রম করে থানায় যেতে হয়। পুলিশের সেবা এখন জনগণের দোরগোড়ায়। দ্রুত যেকোনো ধরনের পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, সমাজকে মাদকমুক্ত করতে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা এখন অনেকটা মাদকমুক্ত হয়েছে।
আমরা মাদক নিয়ন্ত্রণে কিট নিয়ে আসছি। প্রথমে পুলিশকে পরীক্ষা করা হবে। কোনো পুলিশ সদস্য মাদকাসক্তের তালিকায় আসলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে তিনি পুলিশের সহযোগিতা করার আহ্বান রেখে আরও বলেন, আপনাদের সহযোগিতা চুয়াডাঙ্গা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম স্যার চুয়াডাঙ্গা জেলাকে মাদকমুক্ত করবো।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দামুড়হুদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুল খালেক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিক-উর রহমান, এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ভুট্ট।
আরও উপস্হিত কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজির আহমেদ, যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ নেতা মখলেসুর রহমান রিপন,রবিউল হোসেন শুকলাল,আব্দুল কাদের বিশ্বাস,আব্দুল করিম, আলাউদ্দিন, লুৎফর রহমান, সহিদুল হক, শ্রমিক নেতা জামাত আলী, দামুড়হুদা উপজেলা শ্রমিকলীগ যুগ্ম- আহবায়ক শওকত আলী,কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজ কচি, সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ, যুগ্ম সম্পাদক শরিফ রতন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাংবাদিক মেহেদী হাসান মিলন, দপ্তর সম্পাদক বখতিয়ার বকুল, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শফিউদ্দিন বাবু, যুবলীগ নেতা আবু জাফর, যুবলীগ নেতা বিল্লাল হোসেন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান রানা, সাধারণ সম্পাদক সানাউল কবির শিরিন, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দামুড়হুদা থানার সকল পুলিশ সদস্যবৃন্দসহ কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন সকল গ্রাম পুলিশ সদস্যবৃন্দসহ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ভুট্র তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধসহ জাতির ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আপনারা পেছনের দিকে নিশ্চয় তাকিয়ে দেখবেন।
আজকের বাংলাদেশের উন্নয়নের পেছনে অনেক অবদান সকলের। কিন্তু একটি চক্র বোমা মেরে, মানুষ পুড়িয়ে আন্দোলনের নামে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিলো তা কারো জন্য কাম্য নয়। আপনি যে দলেরই হোন না কেন এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ নিশ্চয়ই কেউ সমর্থন করবেন না। সেই অপরাধ কাজ থেকে সবাইকে বের হয়ে আসতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে স্বাধনীতা বিরোধী শক্তি জামায়াত শিবির আলবদর তারা কিন্তু অপরাধমূলক কাজ থেকে বেরিয়ে আসেনি।
এ আগস্ট মাসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন হামলার পরিকল্পনা করা হয়। বিশেষ করে জঙ্গি কার্যক্রম। কিন্তু পুলিশের ভূমিকায় জঙ্গি দমন করতে সক্ষম হয়েছে আমরা। পুলিশের সক্ষমতাও বৃদ্ধি হয়েছে। জঙ্গি সংগঠনগুলো যাতে আবারও এসব কাজ করে দেশকে পিছিয়ে নিতে না পারে সেদিকে সবাইকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।