চুয়াডাঙ্গা জেলাধীন দামুড়হুদা উপজেলার ভারতের সীমান্তবর্তী পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়ন পরিষদ এখন দেশের শীর্ষ স্থানের দাবীদার। এ ইউনিয়নটি বিভাগীয় চুয়াডাঙ্গা জেলা পর্যায় ৪বার প্রথম স্থান অধিকার করেছে বলে চেয়ারম্যান এস এ এম জাকারিয়া আলম জানান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ছায়া ঢাকা পাখি ডাকা সবুজ শ্যামল বাংলার দামুড়হুদা উপজেলার সাজানো গোছানো এ ইউনিয়নটি। দামুড়হুদা উপজেলার ১০বর্গ কিলোমিটার আয়াতনের ১৩টি গ্রাম নিয়ে ১৯৯৪ সালে পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়ন পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথমবার খাজা আবুল হাসনাত চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হয়। এরপর ৩য় বারে আব্দুল হামিদ এবং এস এ এম জাকারিয়া আলম ২য়, ৪র্থ ও ৫ম বারের মত ৩বার নির্বাচিত হয়।
এস এ এম জাকারিয়া আলম তিনবার চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে ব্যপক উন্নয়ন হয়েছে যা অব্যহত রয়েছে।
দর্শনা শহর থেকে মাথাভাঙ্গা নদীর উপর নির্মিত মীর্জা সুলতান রাজা ব্রীজ পার হলেই চোখে পড়বে উন্নয়নের চিত্র। ১০ বর্গ কিলোমিটার আয়োতনের এ ইউনিয়নে ৬৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার (পিচের) পাঁকা সড়ক ও দিক নির্দেশনা চিহ্ন।
বর্তমান চেয়ারম্যান এস এম জাকারিয়া আলম বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী ৫৩জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে প্রতিটি সড়কের নামকরণ করা করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রামে সড়কগুলো আলোকিত করেছে শতাধিক সোলার স্ট্রীট লাইট ও পল্লী বিদ্যুৎ এর মাধ্যমে।
এছাড়া প্রতিটি গ্রামের অলি গলি সড়কগুলো বি বি ও ফ্লাট সোলিং করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রামের সাথে যেমন সংযোগ সড়ক আছে তেমনী উপজেলা ও জেলা শহরের সাথে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মীর্জা সুলতান রাজার নামে রঙ্গিন ব্রীজটি সেতুবন্ধন সৃষ্টি করেছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিটি বিদ্যালয়ে রয়েছে ডিজিটাল হাজিরা, শহীদ মিনার, পতাকা স্ট্যান্ড ও ক্লাস রুমে ১০০% ফ্যানের ব্যবস্থা। এছাড়া চেয়ার-টেবিল, আলমারি, ফাইল ক্যাবিনেট, কর্নার র্বোড, ও সিসি ক্যামেরা। ফ্যাসিলিটিজ ডির্পাটমেন্ট নির্মাণ করেছে প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বহুতল বিশিষ্ট ভবন। দুরের গ্রামের ছাত্রীদের মধ্যে বাই-সাইকেল বিতরণ করেছেন ৩বার নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান এস এ এম জাকারিয়া আলম।
এছাড়া ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী ৫জন শহীদের নামে হৈবতপুর গ্রামে একটি স্মৃতি সৌধ ও নির্মিত হচ্ছে একটি মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর। প্রতি মাসে ইউনিয়নে মাসিক সভা, চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভাসহ সকল সভা নিয়োমিত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি ৩ মাসে একবার উন্নয়ন কমিটির সভা-সহ নিয়োমিত স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া নিয়োমিত শিক্ষার মান উন্নয়ন ও বাল্য বিবাহ যৌতুক এবং ইভটিজিং-সহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের হস্তারিত বিশেষ করে কৃষি, স্বাস্থ্য, ইন্টারনেট সুবিধা ও শিক্ষাসহ সকল বিভাগের কর্মরত কর্মচারীদের বরাদ্ধকৃত অফিসে বসে ইউনিয়নের মানুষের সেবা প্রদান ও তদারকি করা হচ্ছে।
নিয়োমিত গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ১৩টি গ্রামের দীর্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত বিরোধ বিশেষ ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্ত হওয়ার পর থেকে এক জমির একাধিক মালিক উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ, তালাক, য়ৌতুক ও নারী নির্যার্তনসহ ছোট-খাটো নানা ধরণের বিরোধ সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে নিরশন করা হয়।
গত ১০ বছরে প্রায় অর্ধশতাধিত জমি সংক্রান্ত বিরোধ গ্রাম আদালতের মাধ্যমে নিরশন করেছে। ফলে মামলা বা বিরোধ গ্রাম আদালত ছাড়া অন্য কোন আদালতে যায় না। গ্রাম আদলত পরিচালনায় বিভাগীয় পর্যায় ১ম স্থান অর্জন করেছে। সাজানো গোছানো সুন্দর বাউন্ডারী ওয়াল গেট, মীর্জা সুলতান মুক্ত মঞ্চসহ সম্পূর্ণ কমপ্লেক্্র ভবনটি সকলের দৃষ্টি কাড়ে।
এ ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামের মসজিদ, মন্দির ও ঈগাঁয়ের উন্নয়ন দৃষ্টি নন্দনভাবে নির্মিত হয়েছে যা প্রশংসার দাবীদার।
এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রাম সনাক্ত, দুরুত্ব সম্বলিত মাইল ফলক ও তীর চিহ্ন দিক নির্দেশক। গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ডাস্টবিন রয়েছে। এছাড়া মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে মীর্জা সুলতান রাজা ব্রীজের পাশে একটি দৃষ্টিনন্দন পার্ক ও বিনোদনের জন্য উন্মুক্ত মঞ্চ নির্মিত হয়েছে। যেখানে নিয়োমিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
এ ইউনয়নের কৃষকদের মাঠে মাঠে ডিপটিবয়েল ও কৃষক সেড। বর্তমান ৩ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এস এ এম জাকারিয়া আলম ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মান, শ্রীলংকা ফিলিপাইন সফর ও স্থানীয় সরকার বিষয়ে একাধিকবার টেলিভিশনে টক শো-তে ও জাতীয় মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়েছেন।
বর্তমান চেয়ারম্যান স্বর্ণপদক-সহ জেলা পর্যায় ৩বার ও একবার বিভাগীয় পর্যায় ১ম স্থান অধিকার করেছে ইউনিয়টি। পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়ন পরিষদ বর্তমানে দেশের শ্রেষ্ট ইউনিয়ন হিসাবে এলাকাবাসী দাবী করেছেন।
-দামুড়হুদা প্রতিনিধি