দামুড়হুদায় উপজেলা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টার সময় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পরিষদের সম্মেলন কক্ষে মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সম্পত্তি, বাল্যবিবাহ নারী ও শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাস ও নাশকতামূলক কর্যক্রম পর্যালোচনা, মাদকদ্রব্য ও চোরাচালান নিরোধ, চোরাচালান প্রতিরোধ, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ, মানব পাচার প্রতিরোধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা, সড়কের শৃঙ্খলা, ফুটপাত হকারমুক্ত ও দখলমুক্ত, দ্রব্যমূল্য সহনশীল রাখাসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার উপর বিস্তারিত আলোচনা হয়।
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা’র সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে চোরাকারবারিরা সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে সেদিকে আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে, কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, নাশকতাকারীরা যেনো জ্বালাও পুড়াও করতে না পারে সেদিকে সর্বক্ষণ আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। উপজেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত সুন্দর ও স্বাভাবিক রয়েছে। এজন্য তিনি পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বর্তমান দেশের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসন বদ্ধ পরিকর। তাই অপরাধ প্রবণতা বন্ধে ও আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নের পাশাপাশি সকল নাগরিককে ভূমিকা রাখতে হবে এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান। অপরদিকে বাল্যবিবাহ ও মাদক প্রতিরোধে শক্ত অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেন। বাল্যবিবাহ একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যা, অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে হয়। বাল্যবিবাহ মেয়েদের উপর স্বাস্থ্য সমস্যা সহ বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বাল্য বিবাহের কারণে তাদের শিক্ষার সুযোগ সীমিত হওয়া, সহিংসতা বৃদ্ধিসহ নানা ধরনের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। উপজেলায় বিবাহ পরানোর কাজে নিয়োজিত কাজী ও ইমামদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখা সহ জবাব দিহিতায় রাখা হবে, উঠতি বয়সী তরুণ প্রজন্ম স্কুল পড়ুয়া কলেজ পড়ুয়া মরণব্যাধি মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ছে ধ্বংস হচ্ছে পরিবার-পরিজন, মাদকের বিরুদ্ধে আরো কঠোর হতে হবে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সচেতন হতে হবে তাহলে মাদক নির্মূল করা সম্ভব।
এসময় বক্তারা বলেন, উপজেলায় যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মত বিভিন্ন স্থানে ক্লিনিক খুলে অপারেশনের নামে চলছে রমরমা গলাকাটা বানিজ্য। এসব ক্লিনিকে নেই কোন ডিগ্রীধারী ডাক্তার ও নার্স। ফলে গ্রামের সাধারণ মানুষ বলির পাঠা হচ্ছে। কয়েকদিন আগেও কার্পাসডাঙ্গা বাজারে একটি ক্লিনিকে একজন প্রসূতির মৃত্যু হয়। তাই অতি দ্রুত এসব ক্লিনিক গুলোকে আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বক্তারা।
এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস, উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, দামুড়হুদা মডেল থানার তদন্ত ওসি মাহবুবুর রহমান, দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী, উপজেলার বিজিবি ক্যাম্পের প্রতিনিধি বৃন্দ, দামুড়হুদা উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসার রাফেজা খাতুন, উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হোসনে জাহান, উপজেলা ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার মোছা: মারিয়া মাহবুবা, উজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সামসুন্নাহার, জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।