দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের উপ সহকারী প্রাণী সম্পদ অফিসার নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস (৪০) বাদী হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে, দামুড়হুদা উপজেলার চিৎলা গ্রামের আনসার আলীর ছেলে আব্দুল কুদ্দুসের ৮ মাসের গর্ভবতী একটি গাভী গরু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। গাভী গরুটির চিকিৎসার জন্য দামুড়হুদা উপজেলার উপ সহকারী প্রাণী সম্পদ অফিসার পশু চিকিৎসক নজরুল ইসলাম কে বললে তিনি গাভী গরুটির চিকিৎসা দেন। গাভী গরুটির শির টানা রোগ হওয়াই তিনি আমার গরুর শির কেটে দেয় এবং বলে ভালো হয়ে যাবে। তখন আমি বলি শির কেটে দিলে কিভাবে ভালো হবে। গাভী গরুটি তো মারা যাবে। তখন তিনি বলেন গরুর কোন কিছু হইলে তার দায়ভার আমার। তারপর তিনি উক্ত গরুর চিকিৎসা বাবদ আমার নিকট হইতে ৩ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায় এবং বলে যাই, আমি প্রতিদিন এসে গরুটির চিকিৎসা দিয়ে যাব। কিন্তু তারপর হতে তিনি আর কখনোই আমার বাড়িতে আমার গাভিটির চিকিৎসা দিতে আসেনি। আমার গরুর অবস্থা খারাপ হলে তার নিকট ফোন করলে সে বিভিন্ন রকম তালবাহানা ও কালখেপন করে। পরবর্তীতে উক্ত ডাঃ নজরুল ইসলামের অপ চিকিৎসা ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে আমার গাভিটি মারা যায়।
অতঃপর তাহার সাথে যোগাযোগ করলে সে বলে কত কিছুই তো মারা যায়, ঠিক আছে আমি আপনার সাথে যোগাযোগ করব। কিন্তু সে আর কোন সময় যোগাযোগ করেনি। গাভী গরুটি মারা যাওয়ার কারণে আমার আনুমানিক ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে। যার কারণে আমি দামুড়হুদা মডেল থানায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
ভুক্তভোগী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন তুলে একটা গাভী গরু কিনে তা লালন পালন করে আসছি। হঠাৎ গরুটি অসুস্থ হয়ে যাই। আমার গরুর শির টান হয়েছিল। ডাঃ নজরুল ইসলাম গত রবিবারের দিন আমার গরুর চিকিৎসা দিয়ে শির কেটে দেয়। শির কাটার আগে ২টা ইনজেকশন দেয়। আর কোন ওষুধ দেয়নি। চিকিৎসার ফি বাবদ তিনি ৩০০০ টাকা নিয়ে চলে যাই। ঐদিন রাত থেকেই গরুর অবস্থা খারাপ হয়ে যাই। রাতে ডাক্তারকে বারবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেন না। অনেক রাতে একবার ফোন ধরে, গরুর গায়ে অনেক জ্বর থাকার কারণে সে বলে মানুষের পাঁচটি নাপা ট্যাবলেট খাইয়ে দেন। আমি সকালে এসে আবার চিকিৎসা দিয়ে যাব। কিন্তু সে আর কখনোই আমার বাড়ি চিকিৎসা দিতে আসিনি। গত বুধবারে দিন গরুটি মারা যায়। সেদিন থেকেই অনেকবার ফোন দিলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। অনেক অপেক্ষা করার পরেও তিনি আর আমার সাথে যোগাযোগ করেন নি। একবার ফোন ধরে বলে করোনায় কত মানুষ মারা গিয়েছে, সবাই তো সারা জীবন বেচে থাকে না। ঠিক আছে আমি এসে আপনার সাথে যোগাযোগ করবো, কিন্তু সে আর কোন যোগাযোগ করেন নি। তাই আমি গতকাল শনিবার বিকালে প্রতিকার চেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি।
এবিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের উপ সহকারী প্রাণী সম্পদ অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, গরুটার শির টানা ছিল, আমি অপারেশন করে দিয়েছিলাম। অপারেশন এর আগে আমি আমার স্যারের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম এবং সে মোতাবেক চিকিৎসা দিয়েছি। ২৫০০ টাকা ঔষধ পত্র খরচ বাবদ নিয়েছিলাম। মনে হয় গরুটার ফুড পয়জোনিং হয়েছিল। সেই কারণেই হয়তো মারা গিয়েছে।
উপজেলা প্রাণি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গাভী গরুটির চিকিৎসা দেওয়ার পরে চিকিৎসক নজরুল ইসলাম বিষয়টি আমাকে জানাই ওই অবস্থায় আমি কুষ্টিয়াতে ট্রেনিং এ ছিলাম। পরবর্তীতে গরুটি মারা গিয়েছে এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। চিকিৎসা বাবদ কোন টাকা পয়সা নেওয়া যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টাকা পয়সা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।