দামুড়হুদায় বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন উপজেলার জয়রামপুর মালিতা পাড়ার মৃত মূসা করিমের ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন (৫০)। তাঁর মাসিক আয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। অভাব এখন আর তাঁর দুয়ারে হানা দিতে পারে না।
গত রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জয়রামপুরের কুমামীদহ মাঠে তোফাজ্জেল হোসেনের ফুলের বাগান। সেখানে তোফাজ্জেল হোসেন ফুলের বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ২০০০ সালে এই ফুলের চাষ শুরু করেন। প্রথমে তিনি ইটের ভাটায় কাজ করতেন যা হাজিরা পেতেন তা দিয়ে সংসার ঠিক মতো চলতো না, পরে বড় ভাই মোজাম্মেল হকের ফুল চাষে সাফল্য দেখে তিনি ফুল চাষের পরিকল্পনা নেন।
২০০০ সালে ১৮ শতক জমিতে গোলাপ ফুলের চারা লাগান। এতে খরচ হয় প্রায় তিন হাজার টাকা। পাঁচ মাস পর পাঁচ হাজার টাকার গোলাপ বিক্রি করেন। এতে ফুল চাষে উৎসাহ বেড়ে যায়। ওই বছরেই তিনি অবশিষ্ট ৩ বিঘা জমিতে গাদা ফুলের চাষ করেন। ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় তিনি ফুল চাষের পরিমাণ বাড়াতে থাকেন। এর মধ্যে ৩৩ শতক গোলাপ,১৮ শতক গাঁদাফুল, ১৮ শতক কামিনী, ১৮ শতক চন্দ্রমল্লিকা, ১৮ শতক রজনী গন্ধা। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীত মৌসুমে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়। দামও তুলনামূলক বেশি থাকে। তবে সারা বছর গাঁদা ও গোলাপ বিক্রি করছেন।
তোফাজ্জেল হোসেন জানান, বর্তমানে তিনি মোট ৯৯ শতক জমিতে নানা জাতের ফুলের চাষ করছেন। খরচ বাদে ফুল বিক্রি করে তাঁর মাসিক আয় গড়ে ১৫ হাজার টাকা। এই আয় দিয়ে ৫ সদস্যের সংসার চলছে। ফুল চাষের আয় দিয়ে নির্মাণ করেছেন ২৬ হাত দৈর্ঘ্য ও ৯ হাত প্রস্থের আধা পাকা একটি ঘর। এ ছাড়া
ছয় লক্ষ টাকা খরচ করে এক ছেলের মালয়েশিয়ায় পাঠিয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিন বাগানে পাঁচজন শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তোফাজ্জেল হোসেন চুয়াডাঙ্গা ও ঢাকায় ফুল সরবরাহ করছেন। তাঁর সরবরাহ করা ফুল বিক্রি করে স্থানীয় ফুল ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, ‘বিভিন্ন জাতীয় দিবসের আগে ফুল সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই আগামী বছর জমি বর্গা নিয়ে আরও তিন বিঘা জমিতে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়েছি।