দামুড়হুদা উপজেলাবাসীদের কাছে বিপদে আপদে যে নামটি সবার আগে উচ্চারিত হয় তিনি হলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান। তিনি কোনো রাজনৈতিক নেতা নন। তারপরও তাঁর সততা কর্মস্পৃহা দায়িত্বশীলতা ও জনমানুষের প্রতি আন্তরিকতা তাঁকে বসিয়েছে এক অনন্য উচ্চতায়। প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়েও যে আমজনতার মাঝে মিশে যাওয়া যায় তাই যেনো তিনি দেখিয়ে দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত তাঁর কর্মদক্ষতায়, সততায়, আন্তরিকতার ছোঁয়ায় ও সাহসিকতায়। ক্রমশঃ তিনি হয়ে উঠেছেন উপজেলাবাসীর আইকন।
করোনাকালীন মহা দুর্যোগে শহর থেকে গ্রামে গ্রামে তিনি ছুটে বেড়িয়েছেন মানুষকে সচেতন করতে। ঐ সময় তিনি অস্বচ্ছল মানুষের মাঝে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিয়ে হয়েছেন ব্যাপক সমাদৃত।
কার্পাসডাঙ্গায় বাজার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকায় সংঘবদ্ধ ও প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের হাত থেকে দোকানঘর সহ এক একর জমি উদ্ধার করে তিনি স্থাপন করেন সাহসীকতার এক অনন্য উদহারন। এ ঘটনাটি ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। দিলারা রহমান হন সর্ব মহলে প্রশংসিত। আর অবৈধ দখলদারদের কাছে এটা ছিলো যেমন স্মরণকালের সব থেকে বড় পরাজয়। আর এ ঘটনার পর থেকেই ঐ এলাকার প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা হয়ে পরে কোনঠাসা।
এছাড়া অবৈধ বালি ও মাটি পাচারকারী চক্রের ছোখে দিলারা রহমান যেন সাক্ষাৎ যমদূত।
ভূমিহীন, গৃহহীন ও ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীদের গৃহ নির্মাণ এবং গুণগত মান অক্ষুণ্ণ রাখার তদারকির ক্ষেত্রে তাঁর আপোষহীন মনোভাব তাঁকে বসিয়েছে এক অনন্য উচ্চতায়। এছাড়া দর্শনার কালীদাসপুর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বাগদী পাড়ায় একাধিক বার তাদের মাঝে ছুটে যেয়ে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত ঘর বুঝিয়ে দেন। আর প্রাথমিক পর্যায়ে যারা ঘর পাননি তাদের জন্যও দ্রুত ঘর বরাদ্দের আশ্বাস দেন। একই সময় এই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের জন্য উপহার দেন ১০ টি বাইসাইকেল। এসব কাজে দফায় দফায় বাগদী পাড়ায় যাওয়া আসার মাঝে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সন্তান ছোট্ট শিশু নীরবকে কোলে নিয়ে নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমানের আবেগঘন পোস্ট উপজেলার গণ্ডি অতিক্রম করে ব্যাপক সাড়া পড়ে। দিলারা রহমানের কোলে নীরবের ঐ ছবি চিরাচরিত মাতৃপ্রেম বা সন্তানের প্রতি মায়ের প্রকৃত ভালোবাসাই অঙ্কিত হয়েছে।
জয়রামপুরের চৌধুরীপাড়া, নতুন বাস্তপুর, কুড়ালগাছী বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া চাষী গৃহস্থ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পাশে থেকে তাদেরকে নতুনভাবে বাঁচতে শিখিয়ে তিনিও পেয়েছেন অসংখ্য মানুষের দোয়া ও প্রশংসা।
এছাড়া দামুড়হুদার দশমী পাড়ার অগ্নিদগ্ধ শিশু ফারহানাকে বাঁচাতে নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমানের তাৎক্ষণিক ছুটে যাওয়া, চিকিৎসা ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টি আজও ফিরছে মানুষের মুখে মুখে। সম্প্রতি এ ঈদুল ফিতরের পূর্বেও অগ্নিদগ্ধ শিশু ফারহানাকে তিনি পৌঁছে দেন ঈদের পোষাক ও খাদ্য সামগ্রী। উপজেলার বাগদি সম্প্রদায়ের ছোট্ট শিশু নিরবকে কোলে তুলে নিয়ে হয়েছিল ব্যাপক প্রশংসিত।
এছাড়া জয়রামপুরের প্রতিবন্ধী স্বামীর অসহায় স্ত্রী পারভিনা যখন তার ক্ষুদ্র দোকানের পূঁজি হারিয়ে শ্বশুর শাশুড়ী ও সন্তানদের মুখে যখন একমুঠো ভাত তুলে দিতে খাচ্ছিলেন হিমশিম, ঠিক তখনই দেবদূত হিসেবে উপস্থিত হয়ে ঐ দোকানের প্রয়োজনীয় মালপত্র তুলে দিয়ে দোকান সাজিয়ে দেন।
নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমানের রয়েছে হাজারো প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত সর্ব মহলে প্রশংসিত ও ব্যাপক সমাদৃত। যোগদানের পর প্রায় এক বছরের কিছু কম সময়ের মধ্যে তাঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে মাদকাসক্ত ও মাদক পাচারকারী, মাদক কারবারি , ভূমি দস্যু, অসাধু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে আদায় করা হয়েছে জরিমানা, নেওয়া হয় কঠোর আইনি পদক্ষেপ। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দেওয়া হয় জেল ও জরিমানা। সরকারের অনুকূলে রাজস্ব আদায় হয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
তথ্য মতে এ পর্যন্ত দিলারা রহমান পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে মোট মামলার সংখ্যা ২২৮ টি। দণ্ডিত ব্যক্তির সংখ্যা ২৭৮ জন। সরকারের অনুকূলে দণ্ডিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থের পরিমাণ ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫০ টাকা। ঐ সময়ে কারাদণ্ডে দণ্ডিত আসামীর সংখ্যা ০৮ জন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান মেহেরপুর প্রতিদিন’ কে বলেন, আমার উপরে অর্পিত রাষ্ট্রের সকল আদেশ আমি সততা, স্বচ্ছতা ও আন্তরিকতার সাথে পালন করে যাচ্ছি।
বর্তমান সরকারের চলমান উন্নয়নের মহাসড়ক দিয়ে বর্ধিষ্ণু জনপদ দামুড়হুদা উপজেলাও স্বমহিমায় ছুটে চলেছে বলেই আমি মনে করি।