গত চারদিন ধরে দিল্লিতে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জন্য সরকার ও দিল্লি পুলিশের সমালোচনা করা সেই বিচারপতিকে বদলি করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার।
দিল্লি পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করা ওই বিচারপতির নাম এস মুরলিধর।
দিল্লি হাইকোর্ট থেকে তাকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলির বিজ্ঞপ্তি বুধবার রাতে ইস্যু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। খবর এসডিটিভির
সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি মুরলিধরকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হল।
বুধবার বিচারপতি মুরলিধর বলেছিলেন, ‘আমরা আরেকটা ১৯৮৪-র মতো ঘটনা হতে দিতে পারি না দেশে।’
এ সহিংসতা নিরসনে কেন্দ্রীয় সরকার ও দিল্লি সরকার উভয়কেই একসঙ্গে কাজ করতে নির্দেশ দেন তিনি।
চার বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুর, অভয় ভার্মা ও পরবেশ ভার্মার উস্কানিমূলক ভাষণের ভিডিওকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া পিটিশনের শুনানিতে বিচারপতি মুরলিধর এ নির্দেশ দিয়েছিলেন।
কেন ওই চার বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়নি জানতে চেয়ে দিল্লির পুলিশ প্রধানকে প্রশ্ন করেছিলেন বিচারপতি মুরলিধর।
জবাবে কেন্দ্রের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সঠিক সময়েই এফআইআর দায়ের হবে জানালে বিচারপতি পাল্টা প্রশ্ন করেছিলেন, ‘কোনটা সঠিক সময়, মিস্টার মেহতা? দিল্লি তো জ্বলছে।’
এরপর এফআইআর দায়ের না করার পরিণতি কঠোর হতে পারে বলেও সতর্কবার্তা দেন মুরলিধর।
আর এমন বিচারকার্য চলাকালীন বদলি হতে হচ্ছে বিচারপতি মুরলিধরকে।
এদিকে বিচারপতির বদলির এই সুপারিশ গত ১২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিমকোর্ট কলেজিয়াম থেকে করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের ওই সুপারিশের সমালোচনা করে বিচারপতি মুরলিধরের বদলির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিতে আর্জি জানিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন।
প্রসঙ্গত, দিল্লির সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক।
গত রোববার শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ মঙ্গলবার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নিয়েছিল।
অথচ দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হুশ ফিরে চার দিন পর! মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের খাতির-যত্ন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন তিনি।
সোমবার সিএএবিরোধীদের ওপর এর পক্ষের লোকেরা চড়াও হয়ে লুটপাট, ভাঙচুর এমনটি মসজিদে অগ্নিসংযোগকালেও দিল্লি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে।
দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় পুলিশ ও বিজেপি সরকারের এই নীরবতাকে বড় লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াংকা গান্ধী।
সুত্র-যুগান্তর