গুরুদায়িত্ব দিয়ে তাকে পাঠানো হয়েছিল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে। বছর খানেক ধরে তিনি সেখানে আছেন। ভরহীন, গন্ধ-বাতাসহীন ছোট্ট ঘুপচি ক্যাপসুলে ভেসে থাকতে আর কতদিনই বা ভাল লাগে? তাই মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরতে চান অভিজ্ঞ মার্কিন নভোচারী স্কট কেলি।
দীর্ঘ সময়ে ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকার সুবাদে যার নাম ইতিমধ্যেই বেশ পরিচিত। এখন কেলির কাতর অনুরোধ, তাকে যেন পৃথিবীতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। সেখান থেকে নতুন বছর পালন করতে চান তিনি।
পৃথিবীকে পাশ দিয়ে ঘেঁষে যাওয়া বড়সড় একটা উপগ্রহ সজোরে ধাক্কা দিতে পারে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনকে। তাকে নজরে নজরে রাখতে হবে। এই অভিযানের দায়িত্ব দিয়ে স্কট কেলিকে মহাকাশ স্টেশনে পাঠিয়েছিল নাসা। যদিও তার আগেও তিনি বেশ কয়েকবার এই অভিজ্ঞতার সাক্ষী থেকেছেন। তবে এবারের বিষয়টা অনেকটাই আলাদা। স্যাটেলাইটটিকে কড়া নজরে রাখতে হত।
এদিকে, ২০১৫ সালে রাশিয়ার সয়ুজ ক্যাপসুল আমেরিকার মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে একত্রিত হয়ে যায়। ফলে মহাশূন্যে ভাসমান লোক সংখ্যাও বেড়ে যায়। রাশিয়ান দুই নভোচারী থাকতে শুরু করেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে।
তিনজনের সংসারে অহোরাত্র আশঙ্কা-এই বুঝি ধাক্কা মারল স্যাটেলাইট। কেলি বলছেন, মাঝেমধ্যে মৃত্যুভয়ও কাজ করেছে তাদের মধ্যে। এই প্রথমবার অভিজ্ঞ নভোচারী এভাবে নিজের অসহায়তার কথা প্রকাশ্যে আনলেন।
কেলি ছিলেন মার্কিন সেনাবাহিনীর পাইলট, সেই অভিজ্ঞতা থেকেই নাসায় প্রবেশ এবং ভেসে থাকার জীবন শুরু। তার জমজ ভাই মার্কও ছিলেন নভোচারী। তিনি অবসর নিয়ে এখন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু স্কট কেলির আর মুক্তি নেই। নাসা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেওয়া হয়ে গেছে ২০১৬ সালে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ মিশনে তার ওপরই ফের ভরসা করেছে নাসা।
যদিও এ বিষয়ে কেলির বক্তব্য, প্রথম দিনের মতোই তিনি উদ্যমী আজও। ভাল কোনো কাজের প্রয়োজনে আরও বেশ কয়েকদিন এভাবে শূন্যে ভেসেই থাকতে পারবেন। কিন্তু মাঝেমধ্যে যেন সেই উদ্যমে ভাটা পড়ে। তখনই মহাশূন্য থেকে ‘নীলগ্রহ’ টানে তাকে। কবে ফিরবেন, অপেক্ষার প্রহর গোনেন কলোরাডোয় কেলির পরিবারের সদস্যরাও।