চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সংযোগস্থল কুমার নদ সরকারিভাবে খনন কাজ শেষ হওয়ার পরপরই মৎস চাষের জন্য দখলে নেওয়া নদ দখলমুক্ত করেছে দুই জেলার প্রশাসন। মিরপুরের মালিহাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নদের বিপুল এরিয়ায় বাঁধ দিয়ে নিজের দখলে নেয়।
গতকাল রবিবার দুপুরে দুই জেলার প্রশাসন নদের পাড়ে উপস্থিত থেকে বেদখল হওয়া নদ দখলমুক্ত করে। এ সময় নদের দুই পাড়ের দুই উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা ও মিরপুর উপজেলাকে ভেদ করে বহমান রয়েছে প্রাচীন কুমার নদ। সুদীর্ঘকাল ধরে পলি পড়ে পড়ে নদটির গভীরতা কমতে থাকে। এ প্রেক্ষিতে নদের খননকাজের প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। খননকাজে সরকার বরাদ্দ দেয় ৩৫ কোটি টাকা। সম্প্রতি নদটির খননকাজ শেষ হয়েছে।
জানা গেছে, নদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খননকাজের বরাদ্দের টাকা তোলার আগেই মিরপুরের মালিহাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ নদের বিপুল এরিয়া নিজের দখলে নিয়ে নেন। তিনি মাছের চাষ করবেন বলে নদের প্রায় এক কিলোমিটার এরিয়ায় তিন তিনটি বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের পরিকল্পনা হাতে নেন। তার নিজের ওই অবৈধ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে প্রকাশ্যে লেবার দিয়ে নদের প্রবাহে বাঁধ দেয়ার কাজ শুরু করেন। এক প্রকার জোর করেই তিনি তিনটি বাঁধ দেন।
আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হামিদের এই অপকর্মে নদের দুই পাড়ের সাধারণ মানুষ প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। সাধারণ মানুষের এই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ঠেকাতে নদের পাড়ে বোমার বিস্ফোরন ও আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনের ঘটনাও ঘটে বলে জানায় এলাকাবাসী। এতে আইনশৃংখলার মারাত্মক অবনতি হওয়ার আশংকা দেখা দেয়। আর তখনই নড়েচড়ে বসে দুই উপজেলার প্রশাসন। প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয় বাঁধ উচ্ছেদের।
গতকাল রবিবার দুপুরে দুই জেলার পদস্থ কর্মকর্তারা নদের পাড়ে উপস্থিত হয়ে বাঁধ তিনটি উচ্ছেদ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার এডিসি (রাজস্ব) ইয়াহিয়া খান, কুষ্টিয়ার এডিসি ওবাইদুর রহমান, কুষ্টিয়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুবির কুমার ভট্টচার্য, চুয়াডাঙ্গা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম, আলমডাঙ্গা উপজেলার নির্বাহী অফিসার লিটন আলী, মিরপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার লিংকন বিশ্বাস, মিরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিব হাসান, আলমডাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুমায়ুন কবীর, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর, মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম, হারদী ইউপির চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, মালিহাদ ইউপির চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, হারদী ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি আশিকুর রহমান ওল্টু, সাধারণ সম্পাদক আইনাল হক প্রমুখ।