বেতনের চেয়ে বহুগুণ বেশি অর্থের সন্ধান মিলেছিল ব্যাংকে, সেই অর্থের বৈধ কোনো উৎস না মেলায় রাজধানীর গুলশান থানার সাবেক ওসি ফিরোজ কবির ও তার স্ত্রীকে যেতে হচ্ছে জেলে।
ফিরোজ কবির মেহেরপুর সদর উপজেলার সিংহাটি পশ্চিমপাড়ার ওলি মোহাম্মদের ছেলে। তার অপর ভাই আজিজুল ইসলাম বারাদী বাজারের একজন সার ব্যবসায়ী।
দুদকের দায়ের করা মামলার রায়ে ফিরোজ কবিরকে ৬ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী সাবরিনা আহমেদ ইভাকে ৪ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আজ বুধবার আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর ওই দম্পতিকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
ফিরোজ কবিরকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দ্বিগুণ, অর্থাৎ এক কোটি ৭৪ লাখ ৩৪ হাজার ৩৮৮ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘোষিত আয়ের বাইরে যে ৮৭ লাখ ১৭ হাজার ১৯৪ টাকা তার অ্যাকাউন্টে পাওয়া গেছে, তা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
রায়ের দিন থেকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে ফিরোজ কবিরকে ওই অর্থদণ্ডের টাকা পরিশোধ করতে হবে। তা দিতে না পারলে দণ্ডবিধির ৩৮৬ ধারা অনুযায়ী তা আদায়ের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান এ আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাইফুল ইসলাম।
দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ আতাউল কবির ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর গুলশান থানায় ওই দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের পর ২০১৯ সালে অভিযোগপত্র জমা পড়ে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ৩১ মে র্পযন্ত সময়ে এবি ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, এনআরবি কর্মাশিয়াল ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংকে ফিরোজ কবিরের নামে এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকে তার স্ত্রী সাবরিনা আহমেদ ইভার অ্যাকাউন্টে মোট ৩ কোটি ৯ লাখ টাকা জমা করেন।
রায়ে বলা হয়, অধিকাংশ হিসাব খোলার সময় ফিরোজ কবির অর্থের উৎস চাকরি দেখিয়েছেন। কিন্তু যে ধরনের ও যে অংকের লেনদেন হয়েছে, তা তার বেতন-ভাতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। অর্থের উৎস সম্পর্কে কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা বা প্রমাণও তারা দাখিল করতে পারেননি।
“এতে প্রমাণিত হয় যে, জমাকৃত উক্ত অর্থ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দুর্নীতি ও ঘুষ সংক্রান্ত সম্পৃক্ত অপরাধলব্ধ।”