সার্বিকভাবে নতুন শিক্ষাক্রম প্রবর্তন কাজ আরও এক বছর পিছিয়ে গেল। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী বছর কেবল কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাথমিকের প্রথম এবং মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে তৈরি পাঠ্যবই পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে।
সার্বিকভাবে নতুন শিক্ষাক্রম প্রবর্তন কাজ আরও এক বছর পিছিয়ে গেল। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী বছর কেবল কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাথমিকের প্রথম এবং মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে তৈরি পাঠ্যবই পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে।
এরপর সেটির অভিজ্ঞতার আলোকে ২০২৩ সালে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া হবে নতুন পাঠ্যবই। শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক যৌথসভায় বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বছরের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী বছর প্রথম, দ্বিতীয় এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে সব শিক্ষার্থী পাঠ্যবই পাবে। কিন্তু দুই কারণে এটি পিছিয়ে যাচ্ছে। একটি হচ্ছে, নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা যায়নি।
আরেকটি হচ্ছে, শিক্ষাক্রম রচনায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) কর্মীদের এবং বিদেশি কয়েকটি সংস্থাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে এনসিটিবির কর্মকর্তারা কম গুরুত্ব পেয়েছেন। এ নিয়ে টানাপড়েন চলছিল।
সূত্র জানায়, এর রেশ ধরে গত ১৮ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এনসিটিবিতে একটি চিঠি দেওয়া হয়। তাতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবই না নেওয়ার কথা এনসিটিবিকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এই টানাপড়েনের সূত্র ধরেই বৃহস্পতিবারের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রাথমিক স্তরে আগামী বছর পাঠ্যবই প্রবর্তনের ইস্যুতে ভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া গেছে। কেউ বলেছেন, ২০২৩ সালে প্রাথমিক স্তরে পাঠ্যবই যাবে পরীক্ষামূলক বাস্তবায়নের জন্য। আগামী বছর আগের বই-ই চলবে। আর কেউ বলছেন, আগামী বছর প্রাথমিকের দুই শ্রেণির পরিবর্তে কেবল প্রথম শ্রেণিতে যাবে।
নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের কাজটি করে থাকে এনসিটিবি। সংস্থাটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ভার্চুয়ালি বৈঠকটি হওয়ায় হয়তো একেকজন একেক রকম শুনেছেন। তাই সভার সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা প্রয়োজন। তবে আমি শুনেছি, নতুন শিক্ষাক্রমে লেখা পাঠ্যবই আগামী বছর পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে প্রাথমিকের প্রথম এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিক্ষাক্রমের রূপরেখা এখন পর্যন্ত উপস্থাপন করা যায়নি। এজন্য আমরা একটু সময় নিচ্ছি। ২০২৩ উল্লিখিত তিন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সবাই নতুন পাঠ্যবই পাবে। আর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ ১০০টি স্কুলে হবে, না আরও বেশি স্কুলে হবে তা সিদ্ধান্ত প্রকাশের পর জানা যাবে।
জানা গেছে, ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহাসহ শিক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যোগ দেন।
এর আগে ২০২১ সালে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবই দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিততে কাজ এগোয়নি। এরপর গত বছরের জুনে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল ২০২২ সালে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবই যাবে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৩ সালে অষ্টম শ্রেণি ও ২০২৪ সালে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাক্রমের বই দেওয়ার কথা ছিল।