নানা সমস্যায় জর্জরিত ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গ হাউজ। জেলার একমাত্র এই মর্গে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মরদেহ কাটা হয়। ময়নাতদন্তের ফল নির্ভর করে দক্ষ চিকিৎসক ও সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতির উপর। কিন্তু এই মর্গ হাউজের মান্ধাতা আমলের যন্ত্রপাতিই ভরসা।
জানা গেছে, মরদেহ পরিবহনের পর্যাপ্ত ট্রলি, বেওয়ারিশ মরদেহ সংরক্ষণের মরচুয়ারি, কুলার, সূক্ষ্ণ আঘাত চিহ্নিত করতে পোর্টেবল এক্স-রে মেশিন এবং গুলিবিদ্ধ, বোমাহত, কীটনাশক পানকারী, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ও ধর্ষণের শিকার মরদেহের বিভিন্নভাবে ছবি তোলার জন্য উন্নতমানের ক্যামেরা, ফোকাসিং লাইট,ইলেকট্রিক করাত, স্টেইনলেস স্টীল ছুরিসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই নেই জেলার একমাত্র এই মর্গ হাউজে।
মর্গে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে রাখার নেই কোন আধুনিক ব্যবস্থা। প্লাস্টিকের কোটায় নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয় যত্রতত্র।
মর্গের জন্য মাত্র একজন অস্থায়ী স্টাফ থাকায় এসব সমস্যা দিন দিন বাড়ছে বলে জানা যায়। মরদেহ কাটার ঘরে আলো না থাকায়, অনেক মৃত্যুর কারণ চিহ্নিত করতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসককে। বিশেষ করে মরদেহের গায়ে থাকা আলামতগুলো চিহ্নিত করা কঠিন হয়। এছাড়া মর্গের নিজস্ব কোন ল্যারেটরি না থাকায় মরদেহের বিভিন্ন নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়। ফলে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় রিপোর্টের জন্য। অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ নির্নয়ে ময়না তদন্তের রিপোর্ট তাৎক্ষণিক দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা হয় না ল্যাবরেটরীর অভাবে। নানা ধরনের পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠাতে হয় মর্গের বাইরে।এতে করে অপেক্ষা করতে হয় মাসের পর মাস।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঝিনাইদহ মর্গ হাউজের মরদেহ বহন করা ট্রলির বেহাল দশা। যেকোন সময় মরদেহ বহনের সময় ভেঙে পড়তে পারে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই। মরদেহ সংরক্ষণের ফ্রীজটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে। মরদেহ কাটা হচ্ছে পুরাতন ছুরি ও কাপড় কাটার কাটার কাঁচি দিয়ে।মরদেহের সাথে আগত স্বজনদের বসার কোন ব্যবস্থা নেই। রুমে কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মেডিকেল অফিসার জানান, জনবলের অভাবই মর্গের প্রধান সমস্যা। একজন পরিছন্ন কর্মী ও মরদেহ কাটছেড়া করার জন্য সহযোগীর প্রয়োজন। স্থায়ী জনবল ছাড়া পরিষ্কার পরিছন্ন রাখা সম্ভব না।
এ বিষয়ে জানতে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা: শুভ্রা রানী দেবনাথকে তাঁর ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।