নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর তল্লা এলাকায় মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় মাটির নিচে গ্যাসের সম্ভাব্য উৎস অনুসন্ধানে সোমবার মাটি খুঁড়ে তল্লাশি চালানো হবে।
তদন্ত কমিটির সদস্য নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন।
বিস্ফোরণের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের গঠিত তদন্ত কমিটি ছাড়াও আবদুল্লাহ আল আরেফিন জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটিরও সদস্য।
তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির সবাই কাজ করছেন। বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ সব কিছুই পর্যবেক্ষণ করে দেখা হচ্ছে। যথাসময়ে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
ইতোমধ্যে মসজিদের একটি এসি খুলে দেখা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, আগুনে এসির ওপরে কভার নষ্ট হয়েছে। তবে ভেতরের সব কিছুই ঠিক আছে। এসি বিস্ফোরণ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, গ্যাসের লাইনে লিকেজের বিষয়ে সোমবার মাটি খুঁড়ে দেখা হবে মসজিদের নিচ দিয়ে গ্যাসের লাইন আছে কিনা। তা ছাড়া কোথা দিয়ে গ্যাস বের হয়েছে। তবে এ কার্যক্রম সোমবার কখন শুরু হবে সেটি বলা যাচ্ছে না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোশারফ হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত রিপোর্ট জমা না দেয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা কাজ শুরু করেছি। অনেক বিষয়ের ওপর তদন্ত করতে হবে।
একটি বিষয়ে আগভাগে কোনো কিছু বলা যাচ্ছে না। সব থেকে বড় সমস্যা আহত যাদের সঙ্গে আমরা কথা বলব, তাদের অনেকেই মারা গেছেন। তবে আমরা চেষ্টা করছি প্রকৃত ঘটনা বের করতে।’
প্রসঙ্গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ফতুল্লার তল্লা চামারবাড়ি বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ছয়টি এসির বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬ জন হয়েছে।
রোববার দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন মনির ফরাজি (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।
বাইতুস সালাত জামে মসজিদ থেকে দগ্ধ অবস্থায় যে ৩৭ জনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছিল। শনিবার রাত পর্যন্ত তাদের মধ্যে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এর পর রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত মারা যান জুলহাস উদ্দিন (৩০), শামীম হাসান (৪৫), মোহাম্মদ আলী মাস্টার (৫৫) ও আবুল বাশার মোল্লা (৫১)। তাদের নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৫ জন হয়।
রোববার রাতে মারা যান বরিশালের বাকেরগঞ্জের বারঘড়িয়া গ্রামের সোবাহান ফরাজীর ছেলে মনির ফরাজি (৩০)। ফলে মৃতের সংখ্যা ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে।