বয়স মাত্র ১৬, পড়েন স্কুলে। তবে এসব যেন ভুলেই গিয়েছিলেন কোরিয়ান তরুণী বান হিউজিন। সাবলীলভাবে লক্ষ্য ঠিক রেখে নিজের বন্দুক থেকে একের পর এক বুলেট ছুড়ছিলেন। শেষ অবদি দেশকে এনে দেন পদকও। যা কি না গ্রীষ্ম অলিম্পিকের কোরিয়ার শততম স্বর্ণ পদক। আর শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে হিউজিন হারিয়েছেন চীনের হুয়াং ইউটিংকে। যার ঝুলিতে কি না ইতিমধ্যে একটি স্বর্ণপদক রয়েছে।
গেল শনিবার ইউটিং ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের মিশ্র ইভেন্টে শেং লিহাও-এর সঙ্গে জুটি গড়ে হারিয়েছিল বান হিউজিন এর দেশেকেই। মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের লড়াইয়ে বলতে গেলে সেটারই প্রতিশোধ নিয়ে নিলেন হিউজিন। হিউজিন আর ইউটিংয়ের বয়সের ব্যবধান মাত্র এক বছর। তবে দুজনের লক্ষ্যই দুর্দান্ত। যা দেখা গিয়েছিল গতকালের লড়াইয়ে। এই দুই তরুণীর স্কোরও ছিল সমান সমান ২৫১.৮। পরে শুটঅফে স্বর্ণ পদক জয়ী চূড়ান্ত হয়। যদিও সেখানেও হয়েছিল তুমুল লড়াই। কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছিলেন না। তবে শেষ অবদি হিউজিনের হাতেই ওঠে স্বর্ণ পদক। আর ইউটিং-এর হাতে ওঠে রূপা।
এছাড়া এ লড়াইয়ে সুইজারল্যান্ডের অস্ত্রে গগনিয়াট জেতেন ব্রোঞ্জ। এদিকে যখন হিউজিন বুঝতে পারলেন যে তিনি স্বর্ণ জিতেছেন, তখন তিনি উপরে সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে তার রাইফেলটি নামানোর আগে একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললেন। পরে তার কোচকে জড়িয়ে ধরেন এবং তার সহকর্মী পদকপ্রাপ্তদের সঙ্গে পোজ দেওয়ার সময় চোখের জল মুছছিলেন তখন তিনি আবেগে কাঁপছিলেন বলে মনে হচ্ছিল। হয়তো তিনি নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন নিজের এই অর্জনকে।
পরে তিনি বলেন, ‘এই অল্প বয়সে, যখন আমি আমার পরিবার ছাড়া একা এই গেমসে অংশ নিতে ফ্রান্সে আসি তখন নিজের মধ্যে অনেক চাপ অনুভব করছিলাম। কিন্তু ম্যাচের পর দেখলাম স্বদেশবাসী আমার জন্য উল্লাস করছে তখন আমার মনে হয়েছে, অবশেষে।’
দুই শট বাকি থাকতেই ১.৩ পয়েন্টের তুলনামূলক স্বাচ্ছন্দ্যময় লিড থাকার পরও হিউজিনের মনে হয়েছে তিনি স্বর্ণপদক হারিয়েছেন। ততক্ষণে তার একটি শট বাদে সবগুলোই সম্ভাব্য ১০.৯ এর কমপক্ষে ১০ পয়েন্ট অর্জন করেছিল, তবে তারপরে তিনি ৯.৯ এবং ৯.৬ শট করেছিলেন যাতে ইউটিং ব্যবধানটি কমাতে পারে এবং টাইব্রেকার শ্যুট-অফ যাতে ম্যাচটি যায়। সেখানে হিউজিন ১০.৪ স্কোর করে আর ইউটিং ১০.৩ স্কোর করেন।