নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে মেহেরপুর জেলা বিএনপি।
কেন্দ্রীয় ঘোষিত ৫দিনের কর্মসূচীর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সকালে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ওমর ফারুক লিটন ও যুগ্ম সম্পাদক প্রভাষক ফয়েজ মোহাম্মদের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসক (ভারঃ) লিংকন বিশ্বাসের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন বিএনপির নেতৃবৃন্দরা।
এসময় মেহেরপুর জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মিজান মেনন, সাবেক ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেন, জেলা যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক শেখ হুজাইফা ডিক্লিয়ার, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম, ডাঃ মোঃ ইয়াসিন, জেলা যুবদল সদস্য মনিরুল ইসলাম, খাইরুল ইসলাম, মোঃ ইসমাইল জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নাহিদ মাহবুব সানি, যুগ্ম সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম মিন্টু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন উদ্দিন, জেলা নবীন দলের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে-বর্তমান বাজারে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, পেঁয়াজ, মরিচ গুঁড়ো দুধ, শাকসবজীসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দামে অসহায় ক্রেতা। মোটা চাল এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, চিকন চাল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আটা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ভোজ্য তেলা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, মসুর ডাল ১১০ থেকে ১৩০ টাকা, গুঁড়ো দুধ ৫৯০ থেকে ৬৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকার নীচে নামে না।
সবজিসহ প্রত্যেকটি জিনিস এই ভরা মওসুমে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্যামিতিকহারে এই দাম বৃদ্ধি সরকারের গণবিরোধী নীতির বর্ধিত প্রকাশ। হরিলুট, টাকা পাচারসহ সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতির ভয়াবহ ক্ষতি করে দফায় দফায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল, গ্যাস ও পানির দাম বৃদ্ধি করেছে আওয়ামী সরকার।
এই বৃদ্ধির ‘চেইন রিঅ্যাকশন’ হিসেবেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম হু হু করে বাড়ছে। গত ১০ বছরে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি হয়েছে ৯০ শতাংশ, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪৪ শতাংশ, ডিজেলের দাম বেড়েছে ৮২ শতাংশ এবং পানির দাম বেড়েছে ২৬৪ শতাংশ। এই দাম বৃদ্ধি নজীরবিহীন ও অস্বাভাবিক।
জনগণের নির্বাচিত সরকার থাকলে এই ধরণের সীমাহীন দাম বৃদ্ধি পেতো না। জবাবদিহিতা নেই বলেই দাম বৃদ্ধির পেছনে অনৈতিক সিন্ডিকেট কাজ করছে। ক্ষুধা ও অনাহারে ক্লিষ্ট জনগণের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে নিপতিত করেছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী, সরকারের কোনো দায় নেই। সারাদেশে দুর্ভিক্ষের ছায়া প্রতিদিনই বিস্তৃত হচ্ছে।
ছাড়াও গাড়ীভাড়া, বাড়ীভাড়াসহ জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে লাগামহীনভাবে। এমনিতেই কর্মসংস্থান নেই, তার ওপর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস সাধরণ মানুষের। মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষকে পথে বসিয়ে দিচ্ছে। অভাবের তাড়নায় মা সন্তান বিক্রি করছে, কেউ কেউ আত্মহত্যা করছে।
চৈত্রের তীব্র রোদের মধ্যে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে টিসিবি থেকে তুলনামূলক কম মূল্যে নিত্যপণ্য কেনার জন্য ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে বোঝা যায় বর্তমান পরিস্থিতি কত ভয়াবহ। চাহিদার তুলনায় পণ্য কম থাকায় দুই/তিন ঘন্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায় বিক্রি এবং তার পরে পণ্য কিনতে আসা ক্রেতারা খালি হাতেই ফিরে যান।
এমতাবস্থায় ক্ষুধা, অনাহার, অর্ধাহারে বিপন্ন দেশের মানুষকে এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিএনপি আপনার প্রতি আহবান জানাচ্ছে।