চুয়াডাঙ্গা জীবননগর মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় জীবননগর উপজেলার অন্তরগত মনোহরপুর ইউনিয়নে অবস্থিত।
অত্র বিদ্যালয়টি তার দীর্ঘ দিনের সুনাম আর ঐতিহ্যকে ধারণবাহন করে বহুপথ অতিক্রম করে ভালই চলে আসছিল। কিন্তু চলতি বছরে ম্যানেজিং কমিটির তফসিল ঘোষণার পরপরই সভাপতি নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগে এবং প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়মে জর্জরিত ভানমতির খেলের কারণে শিক্ষাঙ্গনে বিরোধী অনৈতিক কিছু কার্যকলাপের দরুন বিদ্যালয়টি তার দীর্ঘ দিনের সুনাম আর ঐতিহ্যকে হারাতে বসেছে।
একের পর এক অনিয়ম আর দুর্নীতি যেন গ্রাস করে নিচ্ছে বিদ্যালয়টিকে। জীবননগর উপজেলাধীন মনোহরপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নতুন ম্যানেজিং কমিটি গঠনে সঠিকভাবে সরকারী নিয়ম-নীতি অনুসরণ না করে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অফিস সহকারীর যোগসাজে নতুন কমিটি গঠনের পায়তারার খবর পাওয়া গেছে। সরকারী নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কমিটি অনুমোদন হওয়ায় প্রত্যাশায় বিস্মিত হয়েছে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সুধীসমাজ।
ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষে নিয়োগকৃত প্রিজাইডিং অফিসার ও জীবননগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দীনেশচন্দ্র পাল গত ১৮ নভেম্বর নির্বাচনী তফশীল ঘোষণা করেন। কিন্তু তফসীল ঘোষণার পর তা বহুল প্রচলিত স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করে কিন্তু প্রতিষ্ঠান এলাকায় নিবিড় মাইকিং এর বিধান থাকলেও তা করা হয়নি।
মনোহরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নব গঠিত সভাপতি গোলাম রসুলের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অফিস সহকারী এসএম আকরাম হোসেনের কারসাজিতে প্রধান শিক্ষক প্ররোচিত হয়ে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দীনেশচন্দ্র পাল প্রিজাইডিং অফিসার ৪ ডিসেম্বর ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও নির্বাচন না করেই গত তিন আগেই রাতের আধারে মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পকেট কমিটি গঠন করে অনুমোদন করেছে দেই।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের আইন কানুন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই প্রশাসনকে বোকা বানিয়ে অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের কে নোটিশ না দিয়েই এবং রেজুলেশনে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে নির্বাচন সম্পন্ন না করেই সভাপতি নির্বাচন করা হয়েছে।
অপরদিকে নতুন সভাপতি গঠন করার লক্ষ্যে নির্বাচনের জন্য প্রধান শিক্ষকের পক্ষ থেকে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে সভা আহ্বান করার কথা থাকলেও তা না করে প্রিজাইডিং অফিসার তার নিজ স্বাক্ষরিত নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে সিলেকশনের মাধ্যমে তা শেষ করেছেন।
এ পরিস্থিতিতে ম্যানেজিং কমিটি গঠনে সরকারী নিয়মনীতি সঠিকভাবে অনুসরণ করে সভাপতি নির্বাচন এবং অভিভাবকদের ভোটার হালনাগাদ করে শিক্ষার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এবং প্রতিষ্ঠানের এসব অনিয়ম দুর্নীতি, স্কুলের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিকাশ এবং স্কুল ফান্ডের অর্থ যাতে কোন প্রকার লুটপাট না হয় সেদিকে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এলাকার সুধীজনেরা।
এ বিষয়ে মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মাসুদ খাঁন সাংবাদিকদের জানান, মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচিত হতো অভিভাবকদের ভোটের মাধ্যমে কিন্তু এবার ব্যাতিক্রম হলো। তবে আগের কমিটি ছিলো অভিভাবকদের পছন্দের এবং ভোটের মাধ্যমে কিন্তু বর্তমানে যে পকেট কমিটি গঠনের পায়তারা করা হচ্ছে তা একান্ত ব্যক্তিনির্ভর ও একটি স্বার্থনেষি মহলের দূর্নীতির ফসল। কমিটি যতটুকু জেনেছি তা শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ক্লার্ক আকরামের পকেট কমিটি । স্কুলের প্রকৃত অর্থে উনি একজন দুর্ণীতি ও সমস্ত অপকর্মের মূলহোতা।
মিটিং না ডেকেও মিটিংয়ে স্বাক্ষর জালিয়াতু করা, ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন অনিয়ম, ৮ম শ্রেণী পাস সার্টিফিকেট সিনেমার টিকিট বিক্রি করার মতো করে রেজিষ্ট্রেশন মেইনটেইন না করেই প্রধান শিক্ষকে না জানিয়ে এমন হেন কাজ নেই যে তিনি করেন না। তার এসব কুকর্ম ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়তে এখন এখানে তার পছন্দের পকেট কমিটি দিতে সর্বাত্বক চেষ্ঠা করেছেন বলে মনে করেন শিক্ষা অনুরাজ্ঞী সুধীসমাজ।
মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, আমরা কোন সিলেকশন করিনি আমরা ইলেকশনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি তৈরি করেছি।
জীবননগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দ্বিনেশচন্দ্র পাল বলেন, মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়র ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে কোন প্রার্থী না থাকায় সিলেকশনরে মাধ্যমে শেষ হয়েছে।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিরাজুল ইসলাম বলেন, মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে এখনও পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি তবে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-জীবননগর প্রতিনিধি