কিথ রুপাট মারডককে বলা হয় নিডিয়া মোগল। বিশ্বমিডিয়াকে যিনি হাতের তালুই তুলে নাচাতে ভালবাসেন। বিশ্বে শক্তিশালী গনমাধ্যমগুলোর একচ্ছত্র মালিকানা তাঁর। ক্ষমতার উত্থান-পতনের ইতিহাসও রচিত হয় তারই ইঙ্গিতে। তাঁর এমন তৎপরতায় কোথাও তৈরি হয় মানবিক সংকট, আবার কোথাও বা বদলে যায় ক্ষমতার মানচিত্র।
মারডকের বাবাও ছিলেন একজন ধুরন্ধর মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। একবার তিনি এক নির্বাচনে বিজেতাকে কেন্দ্র করে বলেছিলেন, আমার কলম তাকে ক্ষমতায় এনেছে। এমন কথায় বিজেতা সংক্ষুদ্ধ হলে, মারডকের বাবা বলেছিলেন, এবার তাকে আমি ক্ষমতা থেকে সরাবো। মিডিয়ার এই অপতৎপরতা পৃথিবীর চেনা। তৃতীয় বিশ্বের এ পদ্ধতি অমোঘ টোটকা হিসেবে খুব কাজ দেয়। ওয়ান ইলেভেন পর্ব থেকে বাংলাদেশের মিডিয়া প্রশ্নোর্ধ উচ্চতায় থাকতে পারেনি। বরং বিপণ্ন করে তুলেছে তাদের স্বভাবিক গতিগুলো। এতে যে শুধু মিডিয়া কর্মী বা মিডিয়ার সাথে যুক্তরাই দায়ী এমনটি নয় । এদেশে বিচিন্তার রূপক হিসেবে খুব কম গণমাধ্যমেরই জন্ম হয়েছে বরং ক্ষমতালোলুপ ব্যবসায়ীরায় প্রকাশনার সাথে যুক্ত হয়ে গণমাধ্যমকে করে তুলেছে তাদের লাভের খামারবাড়ি।
গণমাধ্যমের এমন হারিয়ে ফুরিয়ে যাওয়া তেজদীপ্তহীনতার মধ্যে থেকেও এখনো একটা দুটো পত্রিকা দায়বোধের শিখা জ্বালিয়ে রেখেছে। দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন তার অন্যতম। এই স্বীকৃতির একটি পোস্ট মর্টেম করা যেতে পারে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া সূত্রের ভিওিতে।
প্রতিক্রিয়া হিসেবে মেহেরপুর প্রতিদিনের ভাগ্যে জুটেছে মামলা, প্রাণনাশের হুমকি ঘোষ প্রস্তাবসহ নানা হয়রানি। স্মরণ করা যেতে পারে সাবেক সাংসদ মকবুল হোসেনের নিউজটি। যেটি ছিল অত্যন্ত যত্নপুষ্ট অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। যার প্রতিবেদকের নামে মামলা করা হয়। অবশ্য এ মামলায় বিজ্ঞ আদালতের পর্যবেক্ষণ এবং পত্রিকার বস্তুনিষ্ঠতা পরাজিত করে বাদী পক্ষকে।
আলোচিত হোটল আটলান্টিক কাণ্ডে জড়িত আইনজীবি, সাংবাদিক, মিডিয়া কর্মী কেউ ছাড় পাইনি। অনলাইন জোয়ার বিরুদ্ধে মেহেরপুর প্রতিদিন আপোষহীন। তাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন যেমন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করেছে তেমনি একের পর এক উন্মোচন করেছে জোয়ায় জড়িত পোশাকি মানুষের মুখোশ, অসৎ দুর্নীতিবাজ ধান্দাবাজদের স্বরপ।
মেহেরপুর প্রতিদিনের দৃশ্যমান অর্জন অনেক। বেশ কিছু প্রতিবেদন বস্তুনিষ্ঠতায় স্বপ্রনোদিত হয়ে আদালত মামলা করেছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব মামলার সুফলও পেয়েছে ভুক্তভোগী জনগণ। স্বল্প সময়ের একটি গণমাধ্যমের এমন সফলতা সময় বিবেচনায় বিরল। এটি সম্ভব হয়েছে সংবাদপত্রের সৎভিত্তি আর নির্ভীকতার জন্য।
সৃজনশীলতা; সম্পাদকীয়তা, ব্যবস্থাপনা এবং সমন্বিত তৎপরতার উপর ভর করে মেহেরপুর প্রতিদিন হয়ে উঠেছে জনগণের একমাত্র নির্ভরতা; একমাত্র আশ্রয় ।