মেহেরপুরের গাংনী বাজারে মাংসের বাজার লাগামহীন। কসাইরা এক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ইচ্ছামতো মূল্য বৃদ্ধি করছে। পাশর্^বর্তী বাজারগুলোতে মাংসের দর কম থাকলেও গাংনী বাজারের কসাইরা বেপরোয়া। জেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের নির্বারিত দরের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে দাপটের সাথেই বেশি দরে মাংস বিক্রি করছেন তারা। ফলে অসহায় হয়ে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।
গাংনীর বিভিন্ন পশুহাটে গিয়ে দেখা গেছে, লক ডাউনে গবাদি পশুর মূল্য বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। অথচ গাংনীর মাংসের বাজারে এর কোন প্রভাব পড়েনি। বরং মাংসের দাম বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে। শবে বরাতের আগে থেকেই পৌর কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত দর উপেক্ষা করে বাড়তি দরে মাংস বিক্রি হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির ব্যপারে ক্রেতা সাধারণ প্রতিবাদ করলে কসাইরা খারাপ আচরণ করে। মাংসের দামে দেয় হাড়গোড়। এ নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ক্রেতা।
ক্রেতাদের অভিযোগ মাঝে মধ্যেই অসুস্থ ও মৃত প্রায় পশু জবাই করে মাংস বিক্রি হলেও তা দেখার যেন কেউ নেই। নির্ধারিত জবেহখানার পরিবর্তে কসাইদের ইচ্ছেমাফিক স্থানে পশু জবাই করা হচ্ছে।
পৌর কর্তৃপক্ষ ও জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা স্থানীয় বাজারের সাথে সমন্বয় করে মাংসের দাম নির্ধারণ সাপেক্ষে মূল্য তালিকা টাঙ্গিয়ে দেয় বছর খানেক আগে। সেখানে গরুর মাংস ৪৫০-৫০০ টাকা, ছাগীর মাংস ৫৫০-৬০০টাকা, খাশির মাংশ ৬৫০-৭০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
অথচ মূল্য তালিকাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে গরুর মাংস ৫৫০ থেকে ৬০০, ছাগলের মাংস ৭৫০ টাকা দামে বিক্রি করছেন। এখানে ছাগী ও খাশির মাংস একই দামে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলে আশীর্বাদপুষ্ট কসাইরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ অনিয়মতান্ত্রিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। মাংস কিনতে আসা ক্রেতাদের মতে বর্তমানে বাজারে গবাদী পশুর মূল্য অত্যান্ত কম তাছাড়া এ জেলার পাশর্^বর্তী এলাকায় হাটবোয়ালীয়া, খলিশাকুন্ডি ও আমঝুপি বাজারে গরুর মাংস ৪২০-৪৫০টাকা এবং খাশির মাংশ ৬০০-৬৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
ঐ সকল বাজারে খাশি ও ছাগীর মাংস পৃথক পৃথক দামে বিক্রি হয়। শুধু গাংনী বাজারেই মাংসের শ্রেণীবিন্যাস করা হয় না। এ নিয়ে মাংসক্রেতাদের মাঝে উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের প্রতি চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকজন কসাইয়ের সুবিধার জন্য কেন হাজার হাজার ভোক্তার অধিকার রক্ষা করা হচ্ছে না এ প্রশ্ন কর্তৃপক্ষের কাছে।
এ বিষয়ে গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী বলেন, আগামী রবিবার ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সাংবাদিকদের নিয়ে মাংস ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করা হবে। সবার সম্মতিক্রমে বাজার দর নির্ধারণ ও এ সমস্যার সমাধান করা হবে বলে মতামত ব্যক্ত করেন তিনি।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, বাজার মনিটরিং করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।