রাজধানীর ওয়ারীর একটি বাসা থেকে সজীব হাসান নামে এক যুবকের পাঁচ টুকরা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তার পরকীয়া প্রেমিকা শাহনাজ পারভীনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
ওয়ারী থানা পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি করেছে।
ওয়ারী থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে ওয়ারীর কেএম দাস রোডের একটি বাসা থেকে সজীব হাসানের লাশের পাঁচ টুকরা উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শাহনাজ পারভীনকে আটক করা হয়েছে। ওই প্রেমিকা এখন থানা হেফাজতে রয়েছেন।
এসআই সাইফুল বলেন, হত্যার কথা স্বীকার করেছেন ওই শাহনাজ। এর পরও হত্যার সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছেন কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
আজ ওই নারীকে আদালতে তোলা হতে পারে বলে জানান এসআই সাইফুল।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে পুলিশ ওই নারীর রিমান্ড চাইবে। সাইফুলের লাশ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। নিহত যুবকের পরিবারের লোকজনকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা থানায় যোগাযোগ করেছেন।
নিহত সজীব হাসান শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকূপায়। বাড়িতে তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওয়ারীর ১৭/১ কেএম দাস লেন পানির পাম্প এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে টাকা-পয়সা ও সোনার গহনা বিক্রি করার বিষয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে পরকীয়া প্রেমিকা শাহনাজের ছুরির আঘাতে প্রেমিক সজীব ঘটনাস্থলে নিহত হন।
শাহনাজ স্বামীবাগ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা। তার স্বামী একজন ব্যবসায়ী। তার দুই ছেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন এবং একমাত্র মেয়ে কলেজে পড়েন। নিহত সজীবের সঙ্গে শাহনাজের চার-পাঁচ বছর ধরে অবৈধ সম্পর্ক চলছিল। তারা একটি বাসায় মাঝে মাঝে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন।
বৃহস্পতিবারও দুজন দেখা করে শারীরিক সম্পর্ক শেষে টাকা ও সোনার গহনা পাওনা নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হন। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে সজীব শাহনাজকে চড় থাপ্পড় মারলে শাহনাজ ক্ষিপ্ত হয়ে চুরিকাঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই সজীবের মৃত্যু হয়। মৃতদেহ লুকাতে শাহনাজ মরদেহ পাঁচটি খণ্ড করেন।
স্থানীয়রা বলছেন, গোঙানির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে শাহনাজ পালানোর চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশে দেন। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে।
সূত্র জানায়, গত দুদিন আগে হত্যাকারী শাহনাজ তার প্রকৃত স্বামীর ঘর সংসার-ছেলেমেয়ে রেখে স্বর্ণালঙ্কার, কাপড়চোপড় ও টাকা-পয়সা এবং লাগেজ নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে সজীব হাসানের সঙ্গে দেখা করেন। তার স্ত্রী পরিচয় দিয়ে সজীবের বাসায় অবস্থান করা শুরু করেন।