কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় বসতবাড়ির আঙ্গিনায় লাল শাক, পুঁইশাক, কলমি, বেগুন, ঢেড়শ ও করলা, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন সবজি শোভা পাচ্ছে। সবজিগুলো পরিবারের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে আবার বিক্রি করে অর্থও উপার্জন করছেন কৃষকেরা। একজনের দেখাদেখি অনেক কৃষকই পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপনে আগ্রহী উঠছেন। উপজেলায় ৪১৬টি পরিবার বসতবাড়ির আঙ্গিনায় পুষ্টি বাগান স্থাপন করে লাভবান হয়েছে।
মিরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, করোনা পরবর্তী সময়ে খাদ্য সঙ্কট মোকাবিলায় মিরপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের বসতবাড়ির আঙ্গিনায় ৪১৬টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে।
উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের মশান গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দিনের পুষ্টি বাগানে গিয়ে দেখা যায় তিনি বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তার বাগানে প্রথম দফায় লাল শাক, পুঁইশাক, গৃমা কলমি, বেগুন ও করলার বীজ রোপন করেছেন। ইতিমধ্যেই তিনি লাল শাক ও পুঁইশাক বাগান থেকে তুলে পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি তা বিক্রি করে অর্থও উপার্জন করছেন।
কৃষক জামাল উদ্দিন জানান, গত তিন মাস আগে তার বাড়ির আঙ্গিনায় পুষ্টি বাগান স্থাপনের জন্য বাঁশের বেড়া, সার ও শ্রমিক খরচ বাবদ ১ হাজার ৯৩৫ টাকা এবং বছর ব্যাপি আবাদের জন্য ১২ ধরনের শাক সবজির বীজ প্রদান করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। তারা নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন এবং বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতাও করেছেন। শাকসবজি আবাদ করে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে এবং কিছুটা বিক্রি করে আর্থিকভাবেও লাভবান হয়েছি।
মিরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহিরুল ইসলাম ও জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, কৃষক মাত্র এক শতাংশ জমিতেই ১৪টির মতো শাকসবজি আবাদ করতে পারবেন। একটির পর একটি ফসল উঠে থাকে। এতে পরিবারের চাহিদা পুরন হওয়ার পাশাপাশি বেশি উৎপাদন হলে কিছু বিক্রি করে অর্থ উপার্জনও করে স্বচ্ছলতা আনতে পারে।
মিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামারুল আরেফীন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসরণ করে দেশের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখতে চায় না কৃষি মন্ত্রণালয়। তাই বাড়ির পাশের খালি জায়গাগুলোতে ফসল উৎপাদন করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া শহরের বাসাবাড়ির ছাদেও বিভিন্ন শাকসবজি উৎপাদনে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, করোনা পরবর্তী সময়ে খাদ্য সঙ্কট মোকাবিলায় পারিবারিক কৃষিকে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। এজন্য বসতবাড়ির আঙ্গিনা থেকে শুরু করে বাসাবাড়ির ছাদেও নানা ধরনের শাকসবজি উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে উৎপাদিত পণ্যে পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত হলে তা বিক্রি করে অর্থও উপার্জন করা যাবে।
মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস জানান, এই উপজেলার ১৪?৩টি ইউনিয়নে ৪১৬টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কৃষক সুফল পেতে শুরু করেছে।