উন্নয়ন প্রকল্পের কেনাকাটায় অনিয়ম-দুর্নীতি হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক। তিনি এটাও বলেছেন, প্রয়োজনে চাকরিচ্যুত করা হবে।
বৃহস্পতিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনার অনলাইন সভায় তিনি এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রকল্প পরিচালকদের উদ্দেশে কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে কোনোরকম অনিয়ম বা দুর্নীতি করলে বা অনিয়মের উদ্দেশ্যে অসামঞ্জস্যপূর্ণ দাম ধরলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে, প্রয়োজনে চাকরিচ্যুত করা হবে।
কৃষি যন্ত্রপাতি, সার, বীজ ও অন্যান্য জিনিসসহ প্রকল্পের প্রত্যেকটা জিনিস কেনার সময় ইজিপির মাধ্যমে উন্মুক্ত দরপত্রে কেনা হবে। ঠিকাদারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে। বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে কেনার সুযোগ নেই। তাই কেউ যদি মনে করে থাকেন বেশি দাম লেখা আছে বা সেরকম সুযোগ আছে সেটাকে ব্যবহার করে কোনো দুর্নীতি-অনিয়ম করবেন- সেটি কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। আমি আবারও হুশিয়ার করছি, কেউ যদি কেনাকাটায় অনিয়ম করতে চান, দুর্নীতি করতে চান, তাহলে চরম মূল্য দিতে হবে। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে, স্বচ্ছতার সঙ্গে ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনায় অনলাইন সভায় সঞ্চালনা করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান। এ সময় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংস্থাপ্রধানসহ প্রকল্প পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পটি কৃষি খাতের একটি স্বপ্নের প্রজেক্ট। অনেক দিনের লালিত প্রজেক্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষিবান্ধব এ সরকারের কৃষিতে এখন মূল লক্ষ্য হল কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ, আধুনিকীকরণ করা। কৃষিকে অধিকতর লাভজনক করা। সে লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত অর্থবছর ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য; যার মাধ্যমে হাওরসহ সারা দেশে ধান কাটার জন্য কম্বাইন্ড হারভেস্টার, রিপার যন্ত্রপাতি দেয়া হয়েছে। কৃষকরা এসব যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সফলভাবে বোরো ধান ঘরে তুলেছেন। এ ধারাবাহিকতায় ৩ হাজার ২০ কোটি টাকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পটি একনেকে পাস হয়েছে। এ প্রকল্পের ফলে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়া যাবে এবং চলতি অর্থবছর কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সভায় জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় মোট ৭৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন ছিল। এসব প্রকল্পের অনুকূলে মোট বরাদ্দ ছিল এক হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা, ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৯৪ শতাংশ। করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে শতভাগ অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব না হলেও জাতীয় গড় অগ্রগতির (৮০.২৮ শতাংশ) চেয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি বেশি হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৬৮টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট দুই হাজার ৩৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। সূত্র-যুগান্তর
মেপ্র/আজেএম