মীম নূর জাহান
মৌচাক মোমের তৈরি তা আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু কখনো ে ভবে দেখেছেন মৌমাছিরা এমোম কোথায় পায়? আর কেন ইবা তারা ষড়ভুজা কৃতি প্রকোষ্ট বিশিষ্ট মৌচাক তৈরি করে?
মৌমাছিরা তাদের উদরের নিচের অংশ থেকে মোম নিঃসরণ করে।মোমের সুক্ষ এই কণাগুলো তাদের উদরের বিভিন্ন অংশের ভাঁজে ভাঁজে ত্বকের ওপর জম াহয়।এই কণাগুলো কে নষ্ট না করে তারা নিজেদের পা দিয়ে আঁচড়ে এগুলো ঝেড়ে ফেলে তারপর এদের শক্তিশালী চোয়ালের সাহায্যে পিষ্ট করে পিণ্ডের আকৃতি প্রদান করে।এই মোম পিণ্ড থেকেই একট ুএকট ুকরে তারা মৌচাক তৈরি করে।একারণে ইনোবেল জয়ী জার্মান বিজ্ঞানী কার্লভন ফ্রিশ মন্তব্য করেছিলেন যে প্রত্যেক শ্রমিক মৌমাছি নিজেদের সাথে ছোট- খাটো একটা মোম ফ্যাক্টরি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
তবে ভ্রমররা যেমনি গোলাকৃতি বাসা তৈরি করে মৌমাছিরাওতো তেমন করে বাসা বানাতে পারতো অথবা তারা ছয়টি প্রাচীরের প্রকোষ্টের বদলে কম-বেশি প্রাচীরের বাসাও বানাতে পারতো। হ্যা, তারাতো গোলাকার, পঞ্চভুজ বা অষ্টভুজকার বা অন্য যেকোন আকৃতির বাসা বানাতেই পারতো? কিন্তু এগুলো কেন নয়? ষড়ভুজাকৃতিই কেন মৌমাছিরা বাছাই করল?
গবেষণা থেকে জানা যায়, তারা যদি গোলাকার বা পাঁচ অথবা আটপ্রাচীর বিশিষ্ট প্রকোষ্ঠের বাসা বানাতো তাহলে এই প্রকোষ্ঠগুলোর মাঝে মাঝে আন্তঃপ্রকোষ্ঠীয় স্থান রয়ে যেত যা কেবলই স্থানের অপচয়। কিন্তু ত্রিভুজ, বর্গ বা ষড়ভুজেরক্ষেত্রে এটা স্পষ্ট যে এদের কোনটির ক্ষেত্রেই আন্তঃপ্রকোষ্ঠীয় স্থান থাকেনা, এই জ্যামিতিক আকৃতিগুলোর প্রত্যেকটি বাহু পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দুই প্রকোষ্ঠের জন্য একটি করে সাধারণ প্রাচীরেরও যোগান দেয় ফলে প্রকোষ্ঠগুলোর মাঝে কোন ফাঁকা স্থান অবশিষ্ট থাকেনা। কিন্ত এদের মধ্যে একমাত্র ষড়ভুজই সবচেয়ে কমক্ষেত্র ফলবিশিষ্ট স্থানদখল করে ফলে এটি নির্মাণে সবচেয়ে কমনির্মাণ উপকরণের অর্থাৎ মোমের প্রয়োজন পরে। এছাড়াও ইংরেজি ‘ঈ’ অক্ষরের মতো আকৃতির লার্ভাদের প্রতি পালনের জন্য মৌমাছিদের তৈরি এই ষড়ভুজাকৃতির প্রকোষ্ঠেই সর্বাপেক্ষা নিখুঁত বাসস্থান।
প্রকৃতপক্ষে মৌমাছিদের নির্মিত এই ষড়ভুজ আকৃতির প্রকোষ্ঠগুলোই সবচেয়ে সাশ্রয়ী পরিকল্পনা। কিন্তু কীভাবে তারা দক্ষ প্রকৌশলীদের মতো এই নির্মাণশৈলী সঙ্ক্রান্ত জ্ঞান রপ্ত করেছে অনেক গবেষণার পরও আজ পর্যš Íকেউ তা আবিষ্কার করতে পারেনি।
লেখক: কৃষিবিদ