নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দাখিল করা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোননয় পত্রের সাথে জমা দেওয়া হলফনামা, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে। যা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের থেকেও কয়েক গুণ বেশি।
প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ (সদর ও মুজিবনগর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি এর আগে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাদশ সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার আগে তিনি ঢাকার একটি প্রাইভেট কলেজে শিক্ষকতা করতেন।
গত ১০ বছরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের রেকর্ড পরিমাণ সম্পদের একটি বড় উৎস হলো কৃষি। এই খাতে বছরে ২৫ লাখ টাকার বেশি আয় করেন তিনি। এছাড়া অন্যন্যা খাতেও তার আয় বেড়েছে।
হলফনামায় তিনি লিখেছেন, কৃষি থেকে তাঁর বছরে আয় ২৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ১৭ লাখ ৭৯ হাজার ৩৭৪ টাকা, শেয়ারবাজার ও ব্যাংক আমানত থেকে ৪ লাখ ২৮ হাজার ২০১ টাকা এবং পারিশ্রমিক, ভাতা, সম্মানী হিসেবে ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ২৭৫ টাকা আয় করেন। এই হিসাবে তাঁর আয়ের বড় অংশটি আসে পারিশ্রমিক, ভাতা ও সম্মানী থেকে।
তাঁর নগদ রয়েছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৬ টাকা, যা পাঁচ বছর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ছিল ৬ লাখ টাকা। ১০ বছর আগে সংসদ নির্বাচনের সময় নগদ ছিলো ৯ লাখ টাকা এবং ব্যাংকে জমা ছিলো ১১ লাখ ৭৬ হাজার ২৩৮ টাকা।
এ ছাড়া বর্তমানে তাঁর ব্যাংকে আছে ২৯ লাখ ১ হাজার ৯১৫ টাকা এবং পোস্টাল সেভিংস রয়েছে ৪০ লাখ টাকার, যার অর্ধেক তাঁর স্ত্রীর নামে। তিনি যে গাড়িটি ব্যবহার করছেন তার দাম ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তাঁর স্ত্রীর নামে একটি মাইক্রোবাস রয়েছে, যার দাম ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তার স্ত্রী মোনালিসার নগদ টাকা রয়েছে ৪৭ লাখ, ব্যাংকে জমা আছে দেড় লাখ, সঞ্চয় পত্র কেনা আছে ২০ লাখ, ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে ৪০ লাখ টাকা।
ফরহাদ হোসেনের নিজের ২৫ ভরি ও স্ত্রীর ১৩০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। স্থাবর সম্পদ হিসেবে তিনি বেশ কিছু জমিজমার তথ্য এবারের হলফনামায় দিয়েছেন। তাঁর কৃষিজমি রয়েছে ২৭৪ শতক। রাজধানীর উত্তরায় ১ হাজার ৬০০ স্কয়ার ফুটের একটি ফ্ল্যাট তাঁর নামে রয়েছে, তবে তা বুঝে পাননি। এ ছাড়া একটি দোতলা পাকা বাড়ি রয়েছে তাঁর।
তবে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরহাদ হোসেন যে হলফনামা দাখিল করেছিলেন তা নগদ ও ব্যাংকে জমা মিলিয়ে ২০ লাখ টাকা ছিলো। তখন তিনি কোন গাড়ির মালিক ছিলেন না, ছিলো না কোন কৃষি জমি, ব্যবসা এমনকি কোন ফ্ল্যাট।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় দেড় কোটিরও কম টাকার সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়। ওই সময় তাঁর কাছে নগদ ছিল ৬ লাখ টাকা। এ ছাড়া তখন তাঁর ছিল ৮০ লাখ টাকা দামের একটি গাড়ি, স্বর্ণ ও মূল্যবান ধাতু ছিল ২০ লাখ টাকার, আসবাব ছিল ৫ লাখ টাকার এবং ব্যবসা ও অন্যান্য সম্পদ ছিল ৩০ লাখ টাকার। ওই বছর তাঁর সঞ্চয়পত্র ছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৩৫৩ টাকার। কৃষি থেকে আয় ছিল ৪ লাখ ও অন্যান্য খাত থেকে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
মেহেরপুর জেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রাপ্ত হলফনামা ও নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসকল তথ্য পাওয়া গেছে।