আন্ডার গ্রাউন্ড ব্যান্ড থেকে সৌদি আরবে প্রথম নারী রক ব্যান্ড হিসেবে প্রকাশ্যে গান গাওয়ার অনুমতি পেয়েছে ‘সিরা’। প্রাথমিক পর্যায়ে গ্যারেজে হতো তাদের পারফর্ম। এরপর জনসম্মুখে আসার সুযোগ হতেই ঘটে বাজিমাৎ।
কঠোর ধর্মীয় বিধিনিষেধ ও পুরুষশাসিত সমাজের বাঁধার দেয়াল টপকাতে পেরেছে সিরার সুর। তারা নিজেদের মতো করে এগিয়ে গেছে। সিরার ব্যান্ড সদস্যরাও অবশ্য তাই মনে করেন। তাদের ভাষ্য, সৌদির এমন বিধির মাঝে ব্যান্ড সিরা নারী শিল্পীদের জন্য অনুপ্রেরণা।
আরবি সংস্কৃতিতে সিরা অর্থ জীবন। এই ব্যান্ডের মূল উদ্দেশ্য- সৌদি নারীদের সংগীতের প্রতি আগ্রহী করা। সদস্যরা জানান বিধিনিষেধ সত্ত্বেও পরিবারের সমর্থন পেয়েছেন তারা।
ব্যান্ডের প্রধান ভোকাল নোরা বলেন, ‘সৌদি নারীরা নিজেদের সংগীত নিয়ে উপযুক্ত বলে মনে করেন না। আমি চাই তারা তাদের প্রতিভা প্রকাশ করুক।’
ব্যান্ডটির বেজ সিঙ্গার মেস বলেন, সৌদি আরবে পারফর্ম করার মাঝে অন্যরকম একটা ব্যাপার আছে। এখানকার মানুষরা অতি উৎসাহী। যেন ওরা বিশ্বাসই করতে পারে না এভাবে গান করা সম্ভব।
আরবের ঐতিহ্যবাহী নিকাব পরেই ড্রাম বাজান ‘থিং’। জানিয়েছেন, সৌদি আরবের নারীদের সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে চান তিনি।
ড্রামার থিং বলেন, সৌদি আরবের প্রত্যেক নারী যাদের সঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা আছে তাদের বলতে চাই- এই গভীর আসক্তিকে হারাতে দিও না। গানের বিভিন্ন ধরণ আছে। অবশ্যই কিছু না কিছু করতে পারবে।
পশ্চিমা ও আরব সংস্কৃতির আদলে গড়ে ওঠে ব্যান্ড সিরা। অসাধারণ গানের লাইন আর রক-আরব সংমিশ্রণ অতীতে আগে দেখা যায়নি, ফলে তাদের গানগুলোতে রয়েছে আলাদা ভাইব; যা দিনে দিনে জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে তুলছে শ্রোতাদের মাঝে।
গত ৪ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে তাদের প্রথম অ্যালবাম।
সিরাই প্রথম না, সৌদি আরবে ২০০৮ সালে ‘দা একোলেড’ নামের আরও একটি নারী রক ব্যান্ড ছিল। যদিও তাদের শুধু মাত্র আন্ডারগ্রাউন্ডেই পারফর্মের অনুমতি মিলেছিল। এবার সিরা জনসম্মুখে পারফর্মের অনুমতি পেয়েছে।
ভিশন ২০৩০ সংস্কার পরিকল্পনার মাধ্যমে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তন করছে সৌদি সরকার। কঠোর ইসলামিক শাসন ব্যবস্থাতেও এসেছে পরিবর্তন। বিশেষ করে নারীদের অধিকারের ব্যাপারে। ফলে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে সৌদি নারীরা- এমনটিই জানাচ্ছে দেশটির গণমাধ্যম।
সূত্র: ইত্তেফাক