গাংনীতে ত্রাণের তালিকায় জোরপুর্বক স্বাক্ষর বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ আকতারুজ্জামান,মেহেরপুর মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যানকে জিম্মি করে ত্রাণের ১২০০ জনের তালিকায় স্বাক্ষর নেয়ার পর আবারো আলোচনায় উঠে এসেছেন আলোচিত আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুর রউফ স্বপন।
ইতোমধ্যে স্বপনের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান রাহাতুল্লাহ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সমীপে। এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান রাহাতুল্লাহ জানান, ত্রাণের চালের জন্য তিনি একটি তালিকা প্রস্তুত করেছেন।
এ তালিকায় কোন দলীয় করণ করা হয়নি। অথচ নানা অজুহাতে আব্দুর রউফ স্বপন তাকে তুলে নিয়ে নিজের তৈরী তালিকায় স্বাক্ষর করিয়ে নেন। নানা ধরণের হুমকী প্রদান করেন। তার অনুগত কর্মীদের নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করে চালও ছিনতাই করে। পরে চাল উদ্ধার করার পর প্রশাসন মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে রাজু নামের এক কর্মীকে এক মাসের জেল প্রদান করেন।
যদিও দলীয় লোকজন রাজু নামের ওই ব্যক্তি তাদের দলের নয় বলে দাবী করছেন। আব্দুর রউফ স্বপনের অত্যন্ত বিশ^স্ত কর্মী হিসেবে পরিচিত বেত বাড়িয়ার আলেহীম বহাল তবিয়তে এসব করছেন। এলাকার একাধিক আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী জানান, আব্দুর রউফ স্বপন অনেক আগ থেকেই বেপরোয়া।
ইতোপুর্বে গাছ কাটা একটি মামলায় সে পুলিশের হাতে আটক হয়। নিজ অনুগত ছাড়া দলীয় লোকজনও তার কাছে অবহেলিত। নেতা কর্মীরা আরো জানান, বর্তমানে গাংনীর রাজনীতিতে চলছে অস্থিরতা। এ মুহুর্তে স্বপন মাস্টারের ভুমিকা কী সেটা খতিয়ে দেখার দরকার। সে কোন দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে মরিয়া সেটাও ভাবার বিষয়।
কাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আব্দুর রহমান জানান, করোনা সংক্রামনের কারণে সরকার কাজীপুর ইউনিয়নে ৪ হাজার ১শ’ ৪৮ জন কর্মহীন ও অস্বচ্ছল ব্যক্তিকে ১৫ কেজি করে ত্রাণের চাল দেওয়ার কথা।
এই চাল প্রকৃত কর্মহীন ও অস¦চ্ছল ব্যক্তিরা যাতে পায় এজন্য সকলে বসে তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছিল। এসময় আ.লীগের নেতা-কর্মীরা অসৌজন্যমূলক আচরণ করে চাল ছিনতাই ও তালিকায় জোর করে স্বাক্ষর করে নেন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে।
কাজীপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সাবেক সভাপতি আবু নাতেক জানান, কাজীপুর ইউনিয়ন আ.লীগের বর্তমান সভাপতি আব্দুর রউফ স্বপন কাজীপুর গোলাম বাজার থেকে চেয়ারম্যান রাহাতুল্লাহকে তুলে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আসেন। এরপর সচিবের রুমে তালা লাগানোর পরপরই চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তালিকায় জোর করে স্বাক্ষর করে নেন।
তিনি আরো বলেন আব্দুর রউফ স্বপনের নানা অপকর্মের কারণে আ.লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি সিনিয়র নেতাদের অবগত করলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে আব্দুর রউফ স্বপনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, ইউপি চেয়ারম্যান রাহাতুল্লাহর আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য গাংনী থানার ওসি বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। গাংনী থানার ওসি ওবাইদুর রহমান জানান, ইউএনওর প্রেরিত পত্র এখনও পাওয়া যায় নি। পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।