নারী সাফে গত ফাইনালের মতো এবারও প্রতিপক্ষ হিসাবে নেপালকে পেয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল রাতে কাঠমান্ডুতে নাটকীয় সেমিফাইনাল ১-১ গোলে শেষ হওয়ার পর সরাসরি টাইব্রেকিংয়ে নেপাল ৪-২ গোলে হারায় পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে। দুই দফায় খেলা বন্ধ ছিল। একবার লাল কার্ড ইস্যুতে। নেপালের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার রেখাকে লাল কার্ড দেখান ভুটানের রেফারি। এ নিয়ে ১০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে।
খেলা শুরু হলে নেপাল ১০ জন নিয়েই লড়াই করে গোল হজম করে। ৫২ মিনিটে ভারতের সঙ্গীতা গোল করেন, ১-০। গোলের পর কিকঅফ করেই গোল করে নেপাল। কিন্তু ভুটানি রেফারি ওম চোকি সেই গোল বাতিল করেন। প্রতিবাদে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। নেপালি ফুটবলারদের দাবি রেফারি বাঁশি বাজানোর পরই কিকঅফ করা হয়েছে। কিন্তু রেফারি সেটি অস্বীকার করে। নেপালের ফুটবলাররা মাঠের সাইড লাইনে চলে যান। তাদের দাবি গোল দিতে হবে।
এ নিয়ে ৪০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। পরে নেপালের সিনিয়র কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে তাদের ফুটবলাররা গোল বাতিলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে খেলায় নামে। ৫ মিনিটের মধ্যে নেপাল গোল করে পুরো ম্যাচের নাটক বদলে দেয়। নেপালি গোলদাতা সাবিত্রী ভান্ডারি গোল করে জার্সি খুলে ফেলেন। রেফারি ওম চোকি সাবিত্রীকে হলুদ কার্ড দেখান। শুধু জার্সিই খুলেননি তিনি, বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ডে লাথি মেরে ভেঙ্গে দেন, নিজের পায়ে ব্যথা পান। গোল করে জার্সি খোলার দৃশ্য দেখা গেছে ১৯৯৯ সালে নারী বিশ্বকাপ ফুটবলে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যকার ম্যাচে গায়ের জার্সি খুলে গোলের উৎসব করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলার ব্র্যান্ডি চাসটাইন। তখন হলুদ কার্ড দেখানোর নিয়ম ছিল না। পরে চালু হয়েছে।
দশরথের রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। ১৬ হাজার দর্শক ছিল। সাফের সবচেয়ে উত্তেজনাকর ম্যাচ দেখেছেন নারী সাফের উপমহাদেশের দর্শক। টানটান উত্তেজনার সেমিফাইনালের নির্ধারিত সময়ের আগেই টাইব্রেকিংয়ের জন্য ভারত ও নেপাল তাদের গোলরক্ষক পরিবর্তন করে। সফল হয় নেপাল। নেপালের গোলরক্ষক অঞ্জনা মাগার তার দলকে ফাইনালে তুলেছেন। সেমিফাইনালে সহকারী রেফারি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশের সালমা আক্তার মনি এবং চতুর্থ রেফারি ছিলেন জয়া চাকমা।
সূত্র: ইত্তেফাক