সারাদেশে শীতের তীব্রতা থাকলেও দুদিন ধরে এক অঙ্কের ঘরে তাপমাত্রা ছিল মেহেরপুরে। এদিকে শীতের তীব্রতার বারতে থাকায় মেহেরপুরের ফুটপথ বা পুরাতন মার্কেট গুলোতে বেচাকেনা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর বেচাকেনা বৃদ্ধি পাওয়াতে দামও বাড়িয়েছে বিক্রেতারা।
গতকাল শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও কমেনি শীতের তীব্রতা। ঘনকুয়াশা না থাকলেও সকাল বেলায় কনকনে ঠান্ডায় বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হচ্ছে না। তবে কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে ছুটছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বোরো বীজতলা নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা। এভাবে তাপমাত্রা কমতে থাকলে কোল্ড ইনজুরিতে বীজতলা নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন কৃষকরা। আগুন জে¦লে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে অনেকে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল শনিবার সকাল ৬টায় এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৭.৯ এবং ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গাংনী মহিলা কলেজের প্রভাষক রমজান আলী জানান, শীত নিবারনের জন্য ফুটপথের গরম কাপড়ের দোকানে প্রচুর ভিড় করছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। সল্পমূল্যে ভালো কাপর পাওয়া যায় বলে খোলা মার্কেটে মানুষ কাপড় কিনতে আসে। কিন্তু দুইদিন শীত বাড়ার সাথে সাথে পোষাকের দামও বেড়ে গেছে।
সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রকিবুল ইসলাম বলেন, বিশেষ করে যারা ফুটপথের বাজার গুলোতে বেচা বিক্রি করছে তাদের ব্যাপক হারে বিক্রি বেড়েছে। তবে দুইদিনের শীতে চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে দামও বাড়ছে। অতিরিক্ত দামের বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অনেকে।
শ্রমিক নেতা মনিরুল ইসলাম বলেন, শনিবার দুপুরেও শীতের তীব্রতা না কমায় বিভিন্ন ড্রাইভারদের সাথে নিয়ে আগুন জ¦ালিয়ে হাত ও পা তাপিয়ে শরীরে রক্তচলাচল স্বাভাবিক রাখছি। অনেক ড্রাইভার গাড়ি চালাতে যায়নি। শীতের তীব্রতার সাথে সাথে ঘন কুয়াশায় গাড়ী চালান ঝুকিপূর্ণ বলে অনেকে গাড়ি নিয়ে বের হননি।
তবে এই শীতে গরিব অসহায়-মানুষ গুলোর পাশে দাড়ানোর জন্য বিত্তবান ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন অনেকে যাতে সাধারণ মানুষের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়।
মেহেরপুর সদর উপজেলার আলমপুর গ্রাম আইরিন খাতুন ইরিন বলেন, মেহেরপুরের থেকেও অনেক কম দামে শিশুদের ভালো জামা-কাপর গাংনীতে পাওয়া যায়। তাই আমি খোলা বাজারে এসেছি। কিন্তু অন্যবছরের তুলনায় চলতি দাম একটু বেশি।
গাংনী উপজেলা ষোলটাকা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্যা চামেলী খাতুন ছোট মেয়ের জন্য পোষাক ক্রয় করতে এসে বলেন, বিভিন্ন গ্রামের বহু নারী-পুরুষ ভিড় করছে এই খোলা মাকের্টে।
গাংনী শহরের ব্যবসায়ী বাবু ভিন্নভাবে অভিযোগ করে বলেন, গ্রামের অসহায় ছিন্নমূল শ্রেণীর মানুষকে বোকা বানিয়ে অধিক দামে খোলা মাকের্টে কাপড় বিক্রয় করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। কারণ এসব চায়না শীতের কাপরের দাম বিভিন্ন মার্কেট গুলোর ভালো মানের দোকান গুলোতেও ৫শত থেকে ১ হাজার টাকা দাম। কিন্তু এই খোলা মার্কেটেও ১ হাজার থেকে ১২’শ টাকা দাম ধরা হয়েছে। ফলে সাধারণ গ্রামের মানুষের সাথে প্রতারনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে খোলা বাজারের ব্যবসায়ী ফিরোজ আহম্মেদ জানান, আমরা এর আগে যেসব বান্ডেল ১৪ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি, সেই বান্ডেল এখন ১৭ হাজার টাকা নেয়। ফলে আমরা এখন বাধ্য হয়ে দাম বাড়িয়েছি।
গাংনী বাজার কমিটির সভাপতি মাহাবুবুর রহমান স্বপন বলেন, ব্যক্তিগত কাজে গাংনীর বাইরে থাকায় এমন হতে পারে। তবে গাংনী ফিরে এব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।