ডিফেন্ডারও যে একজন কিংবদন্তি হতে পারে সেটাই প্রমাণ করে গেলেন পর্তুগিজ ডিফেন্ডার পেপে। পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে ছিলেন দুর্দান্ত। ডিফেন্স লাইনে চীনের সেই মহা প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে থাকতেন তিনি। তাকে ডিঙেয়ে গোল বারে শর্ট নিয়ে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হতো বিশ্বের সব বাঘা বাঘা ফরোয়ার্ডদের। গেল মাসে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হওয়া ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। তখনো অনেকে আঁচ করেছিল। খুব তাড়াতাড়ি ফুটবলকে বিদায় জানাবেন এই কিংবদন্তি। এবার সেটাই সত্যি হলো।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টের মধ্যে দিয়ে ফুটবলে নিজের অধ্যায় শেষের কথা জানান এই পর্তুগিজ। সেই পোস্ট নিজের দীর্ঘ ফুটবল ক্যারিয়ার নিয়ে ৪১ বছর বয়সী এই তারকা বলেন, ‘আমি আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ আমার পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে আপনারা আমাকে সমর্থন ও ভালোবাসা দিয়েছেন।’
জাতীয় দলের পেপের সবচেয়ে ভালো বন্ধু কিংবদন্তি ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ক্লাব ফুটবলে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে একসঙ্গে খেলেছেন রোনালদো ও পেপে। প্রিয় বন্ধু বিদায় বেলায় এক পোস্টের মধ্যে দিয়ে রোনালদো বলেন, ‘আমার বন্ধু, তুমি আমার কাছে কী বোঝাতে চা-ও, তা প্রকাশ করার কোনো ভাষা নেই। মাঠে একসঙ্গে আমরা সবকিছু জিতেছি। তবে সবচেয়ে বড় জয় হলো বন্ধুত্ব। তোমার প্রতি আমার যে সম্মান আছে তা হলো-তুমি অনন্য, আমার ভাই। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।’
এছাড়াও বিদায় বেলায় পেপেকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে পর্তুগাল ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ফার্নান্দো গোমেস। সেইসঙ্গে পেপে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় বলে আখ্যা দিয়েছেন ফার্নান্দো। তিনি বলেন, ‘অসাধারণ পেশাদারিত্ব ছিল তার মধ্যে। ফুটবলের প্রতি তার যে আবেগ, এর জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই।’
১৯৮৩ সালে ব্রাজিলের জন্মগ্রহণ করলেও পর্তুগালে থাকার সুবাদে ২০০৭ সালে পর্তুগাল জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় পেপের। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলেছেন ১৪১টি ম্যাচ। ডিফেন্ডার হয়েও গোল করেছেন ৮টি। জাতীয় দলের হয়ে জাতীয় দলের হয়ে একমাত্র সাফল্য ২০১৬ ইউরোতে শিরোপা উঁচিয়ে ধরা। এছাড়াও জাতীয় উয়েফা নেশনস লিগ ও ফিফা কনফেডারেশন্স কাপে শিরোপা জিতেন পেপে।
তবে ক্লাব ফুটবলে রিয়াল মাদ্রিদে সোনালি সময় কেটেছে পেপের। মাদ্রিদের ক্লাবটির হয়ে জিতেছেন তিনটি লা লিগা, তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং দুটি ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা। ক্লাব ফুটবলে পেপের ক্যারিয়ারের শুরু পর্তুগিজ ক্লাব পোর্তোয়। এরপর ২০০৭ সালের যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। স্প্যানিশ ক্লাবটিতে এক দশক কাটিয়ে ২০১৭ সালে পাড়ি জমান রিয়াল ছেড়ে বেসিকতাসে। দুই মৌসুম তুর্কি ক্লাবটিতে খেলে ২০১৯ সালে ফিরে যান নিজের প্রথম ক্লাব পোর্তোয়।
সূত্র: ইত্তেফাক