বগুড়ার শাজাহানপুরে এক গৃহবধূর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে স্বামী রফিকুল ইসলাম। তাকে মারধর, ব্লেড দিয়ে আঁচড় ও গায়ে এসিড ঢেলে মাথার চুল কেটে দেয়া হয়েছে। এর আগে রফিকুল তার এক বন্ধুকে দিয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার চকলোকমান খন্দকারপাড়ার ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা ওই নারীকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। শাজাহানপুর থানার ওসি আজিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত রফিকুল হানিফ পরিবহনের হেলপার। সে গাবতলী উপজেলার মালিয়ানডাঙ্গা গ্রামের তজমল হোসেনের ছেলে। প্রায় ১০ বছর আগে ওই নারীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের আট বছরের এক মেয়ে রয়েছে।
বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী নারী জানান, স্বামী রফিকুলের নারী আসক্তির কারণে তাদের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিন বছর আগে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। এর এক বছর পর রফিকুল তাকে তালাক দেয়। এরপর সে দুটি বিয়ে করলেও সেগুলো টিকেনি। পরে সে ভুল স্বীকার করে তাকে আবার বিয়ে করে।
তিনি আরও জানান, এরপরও রফিকুলের নারী আসক্তি কমেনি। এ নিয়ে প্রায়ই তাদের ঝগড়া হতো। শনিবার বেলা ১২টার দিকে রফিকুল তার এক বন্ধুকে নিয়ে বাসায় আসে। স্বামীর সহযোগিতায় ওই বন্ধু তার হাত বেঁধে ও মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। এরপর স্বামী রফিকুল তাকে মারধরের পর ব্লেড দিয়ে হাত ও বুকে আঁচড় দেয়। তার কোমর ও দুই হাতে এসিড ঢেলে দেয়। মাথার ডান পাশের চুল কেটে দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, স্বামীর নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর মাথার ডান পাশে চুল কাটা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম ও ফোসকা রয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া এ ফোসকা এসিডের না গরম পানির, তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তাকে ভর্তির পর প্রথমে ক্যাজুয়ালটি বিভাগে রাখা হয়েছিল। পরে ওসিসি হয়ে গাইনি বিভাগের ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে।
শাজাহানপুর থানার ওসি আজিম উদ্দিন জানান, বিকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে কেউ মামলা করেনি। এরপরও স্বামী রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
সুত্র-যুগান্তর
মেপ্র/আরজেএম