সম্প্রতি দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যায় এখন পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৭২ জন মানুষ।
সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার সচিবালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বন্যায় ১৮টি জেলার ৯২ উপজেলার ৫৩৫টি ইউনিয়ন দুর্গত হয়েছে। ২২ লাখ ২৬ হাজার ৪৭২ জন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জামালপুরে চারজন এবং লালমনিরহাট, সুনামগগঞ্জ, সিলেট ও টাঙ্গাইলে একজন করে মোট আটজনের মৃত্যু হয়েছে বন্যাজনিত কারণে।
বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১২ জেলায় এক হাজার ৫৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেখানে ২০ হাজার ৭০৫ জন মানুষ এবং ৫৬ হাজার ৩১টি গবাদিপশু আশ্রয় পেয়েছে। ৫৯৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হলেও এর মধ্যে ১৯৭টি টিম কাজ করছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আনসার, গ্রাম পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক ও এনজিও প্রতিনিধিরা কাজ করছেন।
কভিড-১৯ মহামারির মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
আশ্রয়কেন্দ্রে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ডা. এনামুর রহমান বলেন, এই খবার তৈরি ও বিতরণের কাজে সহায়তা করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সব জেলায় ধান কাট শেষ হওয়ায় বন্যায় ধানের ক্ষতি হয়নি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পাট, ডাল ও শাকসবজির কিছু ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া আমন ধানের বীজতলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ক্ষতি সামলাতে কৃষি মন্ত্রণালয় উঁচু জায়গায় আমনের বীজতলা করে কৃষকদের বিনামূল্যে তা সরবরাহ করবে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য তুলে ধরে এনামুর বলেন, এবারের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলে আমরা আশা করছি। কারণ নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে, যেসব নদীন পানি বাড়ছে সেগুলোর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমতে শুরু করবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।
গঙ্গা ও পদ্মার পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টা বেড়ে এরপর কমার পূর্বাভাস রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীগুলোর পানি কমছে। ফলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। গাইবান্ধ, বগুড়া, জামালাপুর, নাটোর ও নওগাঁ জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
তবে আগামী এক দিনে সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ী ও ঢাকা জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলেও প্রতিমন্ত্রী জানান।
সূত্র- কালের কন্ঠ