চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একক দল হিসেবে নিজেদের সবগুলো ম্যাচ দুবাইয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছে ভারত। যাকে বাড়তি সুবিধা হিসেবে উল্লেখ্য করে এর সমালোচনা করছে বাকি দলগুলো। তবে একে কোনোভাবেই বাড়তি সুবিধা মানতে নারাজ সৌরভ গাঙ্গুলী। বরং এর জন্য ভারতের ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক ও বিসিসিআইপ্রধান সৌরভ গাঙ্গুলীর।
রোহিত শর্মার দলের পাকিস্তানে না যাওয়াটাকে বাধ্য হয়ে করতে হয়েছে বলে দাবি সৌরভের। তিনি বলেন, ‘ভারত নিজেদের ইচ্ছায় সব ম্যাচ দুবাইয়ে খেলতে রাজি হয়নি! তারা পাকিস্তানে যেতে পারছে না, ভারতের সরকার অনুমতি দিচ্ছে না। এজন্য খেলতে হচ্ছে (দুবাইয়ে)। এটা তো ভারতীয় দলের হাতে নেই। ব্যাপারটি তো এমনই।’
এবার কেবল দুবাইয়ে খেললেও আগের দুটি আইসিসি আসরে ভারত অনেক ভ্রমণ করেছে। আর সেখানে সাফল্যও পেয়েছে। যে কারণে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একটি নির্দিষ্ট ভেন্যুর সুবিধা নিয়ে সাফল্য পাচ্ছে ভারত সেটা বলার সুযোগ নেই বলে মনে করেন সৌরভ।
সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, ‘ভারত দেশের মাঠের বিশ্বকাপে ৯টি ভিন্ন শহরে খেলেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে ৮টি (আদতে ৫টি) ভিন্ন শহরে খেলে। ভারত দুবাইয়ে খেলার কোনো ব্যাপার এখানে নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে আছে, ২০০৩ বিশ্বকাপে অধিনায়ক ছিলাম আমি, তখন জিম্বাবুয়েতে সফরে যায়নি ইংল্যান্ড। তারা জিম্বাবুয়েকে পয়েন্ট দিয়ে দিয়েছে, কারণ সেখানে গিয়ে খেলবে না। কাজেই সব দেশেরই নিজস্ব ধরন আছে সবকিছুর এবং আমার মনে হয়, পাকিস্তান সফরে না যাওয়ায় ভারতীয় দল ও সরকারের কোনো ভুল এখানে নেই।’
পাকিস্তানের এই আসর আয়োজনের পেছনে নিজের ভূমিকারও কথাও তুলে ধরেন সাবেক এই বিসিসিআইপ্রধান। বলেন, ‘আমার মনে আছে, আমি যখন বিসিসিআইয়ের সভাপতি ছিলাম ২০২০ সালে, তখন আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক করেছিলাম পাকিস্তানকে। ২০৩১ পর্যন্ত সব বৈশ্বিক আসরের ভেন্যু ঠিক করার গ্রুপের অংশ ছিলাম আমি। ভারতে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০২৯ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ২০৩১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে। এটা তো ভারত নিজে করেনি। তাদের পাকিস্তানে যাওয়ার উপায় নেই।’
পাকিস্তানে খেলতে না পেরে যে ভারতীয় ব্যাটারদের ক্ষতি হয়েছে সেটাও জানান গাঙ্গুলী। বলেন, ‘আমি বলতে পারি, বিরাট কোহলি, রোহিত শার্মা, কেএল রাহুল, শ্রেয়াস আইয়ারের মতো ব্যাটসম্যানদের বরং খারাপ লাগছে লাহোর ও করাচির মতো উইকেটে খেলতে না পেরে, অন্য দলগুলি যেখানে ৩৫০ রান তুলছে। ইংল্যান্ড সাড়ে তিনশ করেছে, অস্ট্রেলিয়া তাড়া করে জিতেছে। নিউজিল্যান্ড ৩৬০ করেছে। দুবাইয়ে সেখানে ২৪০-২৫০ রান হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোহলি, রোহিত, শ্রেয়াস, শুবমান গিলরা ভাবছে, ‘দুবাইয়ে অমন উইকেট কেন পেলাম না আমরা! পেলে তো তিন-চারটি সেঞ্চুরি হয়ে যেত। পাকিস্তানের যেতে না পেরে বরং ভারতই সুযোগ হারাচ্ছে নিষ্প্রাণ উইকেটে খেলার।’
সূত্র: যুগান্তর