পুকুর বা খাল-বিলে নয়; আধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি করা ট্যাংকিতে মাছ চাষ হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়। নতুন এ পদ্ধতির নাম বায়োফ্লক। এতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কম খরচে অধিক মাছের উৎপাদন করা সম্ভব। ফলে দেশের পুষ্টি চাহিদার যোগান বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন উদ্যোক্তারা।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন চুয়াডাঙ্গার হাতিকাটা গ্রামের শিক্ষিত তরুণ শাওন জোয়ার্দ্দার। তরুণ উদ্যোক্তা শাওনের হাত ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলায় এ পদ্ধতির মাছ চাষে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। অল্প জায়গায় বেশি পরিমাণে মূল্যবান মাছ চাষের ফলে অধিক লাভের আশা করছেন শাওন। তার সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই এগিয়ে আসছে এ চাষে।
উদ্যোক্তা শাওন জোয়ার্দ্দার জানান, ঢাকায় বিবিএ পড়ার সময় ইউটিউবে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের ভিডিও দেখে আগ্রহ জন্মায় তার মনে। এর পর লেখাপড়ার পাশাপাশি বায়োফ্লক সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। গ্রহণ করেন প্রশিক্ষণ। তার নিজ গ্রামে শুরু করেন বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ।
শাওন আরো জানান, দেশীয় প্রজাতির শিং, কৈ, মাগুর, ট্যাংরা, পাবদাসহ বেশ কিছু মূল্যবান মাছের চাষ হচ্ছে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে। এতে বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় মাছের উৎপাদন আবারও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। বাজারেও তুলনামূলক কম মূল্যেই পাওয়া যাচ্ছে এসব মাছ।
শাওনের পিতা মহসিন জোয়ার্দ্দার জানান, এক হাজার কেজি মাছ ধারণ ক্ষমতা সম্পন একটি ট্যাংকি প্রস্তুত করতে ব্যয় হয় ৩৫/৪০ হাজার টাকা। মাছের পোনাসহ আনুসঙ্গিক খরচ হয় আরো প্রায় ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু একটি ট্যাংকি থেকে চার মাসে প্রায় এক লাখ টাকা লাভ করা সম্ভব। পরবর্তিতে যেহেতু ট্যাংকির খরচ লাগে না সে হিসাবে পরবর্তিতে লাভের পরিমাণ আরো বাড়ে।
শাওনের সহযোগি ফরহাদ জোয়ার্দ্দার জানান, শাওনের দেখাদেখি এলাকার অনেক তরুণ বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। ইতিমধ্যেই জেলার কয়েক তরুণ শাওনের সহযোগিতায় মাছ চাষ শুরু করেছেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোশাররফ হোসেন জানান, বায়োফ্লক পদ্ধতির মাছ চাষ দেশের পুষ্টি চাহিদায় অসামান্য অবদান রাখবে। একই সাথে শাওনের মতো তরুণ উদ্যোক্তাদের হাত ধরেই মাছ চাষে বিপ্লব আসবে বলে তাদের ধারণা। মৎস্য বিভাগ এ প্রকল্পে আগ্রহীদের সব ধরণের সহযোগিতার আশ^াসও দেন মৎস্য কর্মকর্তা।