‘বিদ্যুৎ-পানির সামান্য মূল্যাবৃদ্ধিতে জনগণের ভোগান্তি হবে না’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তারা এমন পর্যায়ে চলে গেছেন যে, তাদের লোকজনদের ঘর থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। তাদের এখন সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা, ব্যথা-বেদনা ও কষ্ট বোঝার শক্তিও নেই।
রোববার দুপুরে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জনগণের দুঃখ-দুর্দশা এখন তাদের কাছে কোনো বিষয়ই নয়।
ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনায় তিনি বলেন, আমরা বহুবার বলেছি– এ দলটি এখন ব্যাংকক্রাফট হয়ে গেছে। তারা মানুষের কষ্টটা বুঝতে পারেন না। আজকে যেটাকে উনি সামান্য বলছেন, এটা যে একজন সাধারণ মানুষের জন্য কত অসামান্য সেটা বোঝার শক্তিও তার নেই। কারণ তারা এখন এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে, যেখানে হাজার হাজার কোটি টাকা তাদের লোকজনের ঘরের মধ্যে পাওয়া যায়। তারা তো বুঝবেন না মানুষের কষ্ট। এখন বেগমগঞ্জে বাড়ি, কানাডায় বাড়ি, ইংল্যান্ডে বাড়ি, নিউইয়র্কে বাড়ি এগুলোই তাদের এখন প্রায়োরিটি। আমরা বুঝি এর জন্য জনগণ তাদের থেকে মুক্তি চায়।
উল্লেখ্য, ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদ্যুৎ-পানির দাম যতসামান্য বাড়ানো হয়েছে, এতে জনগণের ভোগান্তি হবে না।
সরকার অস্ত্রের মুখে টিকে আছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে যে সরকার অবৈধভাবে জনগণের কোনো ম্যান্ডেড না নিয়েই জোর করে অস্ত্রের মুখে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা দেশের গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে দিচ্ছে অত্যন্ত সচেতনভাবে।
খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্রের মুক্তির নেতা উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আমরা মনে করি তিনি শুধু বিএনপি নেতা নন, তিনি সমগ্র দেশের মানুষের মুক্তির নেতা। তিনি গণতন্ত্রের মুক্তির নেতা। সেই কারণে তার অসুস্থতা আমাদের সবাইকে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করেছে এবং আমরা চেষ্টা করছি দুই বছর ধরেই তাকে একদিকে আইনগতভাবে অন্যদিকে রাজনৈতিকভাবে মুক্ত করবার জন্য। এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকার যারা সব মানবিক বোধগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে তারা আজকে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আটকে রেখেছে। রাজনৈতিক উদ্দেশেই তারা বেগম খালেদা জিয়াকে যেটা তার প্রাপ্য জামিন, সে জামিন তারা দিচ্ছে না।
খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জনগণের কাছে যাচ্ছি। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ করছি। আমরা বিশ্বাস করি জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই তিনি নেতা মুক্ত হবেন।
এ সময় মৎস্যজীবীদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সুত্র-যুগান্তর