সব পেওনিয়ার প্রিপেইড মাস্টারকার্ড বন্ধ করে রাখা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথোরিটি (এফসিএ) যুক্তরাজ্যের ওয়্যারকার্ড সলিউশন লিমিটেডকে সব ধরনের আর্থিক কর্মকাণ্ড বন্ধসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ দিয়েছে। জার্মান কোম্পানি ওয়্যারকার্ড এজির শাখা হিসেবে যুক্তরাজ্যের কোম্পানিটি গত বৃহস্পতিবার তাদের অসচ্ছলতা দেখিয়ে আবেদন করে। এতে সব পেওনিয়ার প্রিপেইড মাস্টারকার্ড ব্যবহারকারী সমস্যায় পড়েছেন। কারণ, এসব কার্ড বরাদ্দ করে ওয়্যারকার্ড ইউকে।
জার্মান পেমেন্ট প্রসেসর ও আর্থিক পরিষেবা সরবরাহকারী ওয়্যারকার্ড এজি ফ্রাঙ্কফুর্ট স্টক এক্সচেঞ্জে ২৫ জুন দেউলিয়া হিসেবে আবেদন করে। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ২০০ কোটি ডলার কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির সাবেক প্রধান নির্বাহী মার্কার ব্রাউন গেফতারও হয়েছে। ওয়্যারকার্ড এজির পতনের খবর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।
ওয়্যারকার্ড ইউকে মূলত এফসিএর নিয়ন্ত্রণাধীন। প্রিপেইড কার্ডে ই-মানি সেবার বিষয়টি তারা অনুমোদন দেয়। শুক্রবার ওয়্যারকার্ড ইউকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এফসিএ। এতে কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি কোনো সম্পদ বা তহবিল নিষ্পত্তি করতে পারবে না প্রতিষ্ঠানটি। প্রিপেইড কার্ডের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের ও বিদেশের সব পেওনিয়ার ব্যবহারকারীরা সমস্যায় পড়েছেন।
এ বিষয়ে পেওনিয়ারের এক ব্লগ পোস্টে বলা হয়েছে, ওয়্যারকার্ড দেউলিয়া ঘোষণা করায় পেওনিয়ার প্রিপেইড কার্ড ব্যবহারকারীদের অবস্থা আমরা অনুধাবন করতে পারছি। আমরা পেওনিয়ারের স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী। ব্যবহারকারীদের অর্থ সুরক্ষার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে পেওনিয়ার। এতে ব্যবহারকারীদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
পেওনিয়ার জানিয়েছে, এখন প্রিপেইড কার্ড ব্যবহারকারীরা সাময়িকভাবে অর্থ উত্তোলন বা নতুন কোনো পেমেন্ট নিতে পারবেন না। পেওনিয়ারের কাছে থাকা অধিকাংশ অর্থের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। পেওনিয়ার এ বিষয়ে অন্যান্য অপশন যুক্ত করার কাজ করছে।
অনলাইনে কাজ বা ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে পেওনিয়ার অনেক জনপ্রিয়। পেওনিয়ার প্ল্যাটফর্মে অর্থ পরিশোধ করে ফ্রিল্যান্সার ডটকম, ফাইভার, গেটিইমেজেস, আপওয়ার্ক, ৯৯ ডিজাইন, পিপল পার আওয়ার, টপকোডার, ইনভাটোসহ বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেস।
ওয়্যারকার্ডের এ সমস্যার প্রভাব পড়েছে দেশি ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যেও। অনেকেই পেওনিয়ার প্রিপেইড মাস্টারকার্ড ব্যবহার করে থাকেন। শুক্রবার থেকে অনেকেই অর্থ উত্তোলন করতে সমস্যার কথা বলেছেন।
ফ্রিল্যান্সার ও অনলাইন উদ্যোক্তা জুয়েল রানা বলেন, যারা গ্রাহক ও মার্কেটপ্লেস থেকে প্রিপেইড কার্ডে টাকা নিতেন, তারা কার্ডে টাকা নিতে পারছেন না। কার্ড ইউজারদের সবকিছু ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে সাবসক্রিপশন সেবা নিতে। কার্ডের মাধ্যমে যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইন সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হচ্ছে। আবার অনেকের টাকা আটকে গেছে। পেপাল সুবিধা না থাকায় অনেকে পেওনিয়ার কার্ড ব্যবহার করে অনলাইন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কেনাকাটা করেন। কার্ড আটকে যাওয়ার সবাই বিপদে পড়েছেন।
সূত্র: টেক ডটআফ্রিকা, পেওনিয়ার ব্লগ