দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেট অপারেশন্স সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন। তবে গতকাল তার কণ্ঠে শোনা যায় আক্ষেপের সুর। গেল পরশু বিসিবি ভবনে নবম বোর্ড মিটিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে জাতীয় দলের অধিনায়কসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বোর্ড কর্তারা।
অথচ সেইসব বিষয়ে তেমন কিছুই জানতেন সুজন। এমনটি আক্ষেপ করে তার এই পদে থাকা কোনো প্রয়োজন আছে কি না সেই বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। চলতি বিপিএলে দুর্দান্ত ঢাকার হেড কোচের দায়িত্ব পালন করছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। টুর্নামেন্টটি এখন চট্টগ্রামে হওয়ায় দলের সঙ্গে সেখানে অবস্থান করছেন তিনি।
মঙ্গলবার অনুশীলন শেষে জাতীয় দলের নবাগত অধিনায়ক এবং পরিচালক নিয়ে কথা বলেন গণমাধ্যমের সঙ্গে। শুরুতে জাতীয় দলের নতুন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘লিপু ভাইয়ের ক্রিকেট মেধা অনেক ভালো। উনি অনেক বছর ধরে ক্রিকেটের সঙ্গে আছেন। তিনি জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার এবং পরিচালক ছিলেন। ওনার বিচক্ষণতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকতে পারে না। আমি মনে করি উনি আসায় ক্রিকেটের জন্য অনেক ভালো হতে পারে।’
তবে এ সময় নির্বাচক হওয়ার দৌড়ে লিপুর নাম আগে শোনেননি বলে জানান সুজন। বলেন, ‘যদিও আমি আগে ওনার নামই শুনিনি। নির্বাচক হতে পারেন, এমন কিছু। এটা খুবই বিস্ময়কর।’ এছাড়াও দলের নতুন নির্বাচক নিয়ে তার মতামত জানতে চাওয়া হলে সুজন বলেন, ‘আসলে আমি কিছু জানিই না এই বিষয়ে। এটা আমার জন্য বিস্ময়কর, আমি ক্রিকেট অপারেশন্স সহকারী পরিচালক অথচ আমি জানিই না এই বিষয়ে। এটা আমার জন্য অবাক করার মতো বিষয়। আমার এই পজিশনে থাকার প্রয়োজনটা কী, আমি আসলে জানি না।’
এ সময় জাতীয় দলের সাবেক প্রধান নির্বাচন মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে নিয়ে সুজন বলেন, ‘আমি বলব নান্নু ভাইয়ের ভাগ্য খারাপ। একজন সাবেক অধিনায়ককে মানুষ যেভাবে বিব্রত করেছে। সত্যি কথা বলতে আমি একটা মেনে নিতেই পারি না। ভুল মানুষের থাকতে পারে। আমি মনে করি সুমন, নান্নু ভাই সবাই সততার সঙ্গে কাজ করেছেন।’ সেইসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেখে যদি আমরা নির্বাচক তৈরি করি অথবা তাদের গালি দিই কিংবা খেলোয়াড়দের গালি দিই।’
একপর্যায়ে টাইগারদের তিন ফরম্যাটের নতুন অধিনায়ক শান্তর উদাহরণ টেনে বলেন, “দেখেন আজকে ‘লর্ড শান্ত’ এখন তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক। কয়েক দিনও আগেও শান্ত লর্ড ছিল। এইসব কথা আমরা মিডিয়া থেকে ছড়াই। আমার কথা হলো সমালোচনা হবেই। শান্ত ভালো খেলতে না শান্তকে নিয়ে সমালোচনা কবে। লিপু ভাই ভালো কাজ করবে না তাকে নিয়ে সমালোচনা হবে। তবে তাদের ভালো কাজগুলো নিয়েও কথা বলতে হবে। নান্নু-সুমন ভাই যখন ছিলেন তখন বাংলাদেশ টিম অনেক সফলতা পেয়েছে।’ গেল বছরের বিপিলের সময় প্রথম বারের মতো ধারাবাহিকভাবে কোনো টুর্নামেন্টে রানের দেখা পান শান্ত।
পরে সেই আসরে এক সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেছিলেন, ‘আমি যখন মাঠে খেলতে নামি, আমার কাছে মনে হয় আমি দেশের বিরুদ্ধে খেলতে নামি।’ অথচ এর এক বছরের মাথায় বিশ্বদরবারে তার নেতৃত্বে যুদ্ধে যাচ্ছে টাইগাররা। তিন ফরম্যাটে শান্তকে অধিনায়কত্ব দেওয়ার বিষয়ে সুজন বলেন, ‘শান্ত তিন ফরম্যাটেই খেলছে। আর সাকিব যেহেতু খেলছে না। তাই আমি মনে করি, শান্ত সবচেয়ে সেরা পছন্দ। আমি মনে করি শান্ত ভালো করবে। তাকে এক বছরের জন্য দায়িত্ব দিয়েছে। ও যেন এখানে ভালো কিছু করে এবং লম্বা সময় ধরে দলের অধিনায়কত্ব করতে পারে, আমি দোয়া করি এবং আশা করি।’
সূত্র: ইত্তেফাক