অফিসে চাকরি হোক বা ঘরবাড়ী দেখভালের কাজ, সবগুলো কাজই জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণও। তাই দিনের শুরু থেকেই শরীর ও মন দুই-ই তরতাজা রাখলে তবেই কিন্তু সারা দিনের কাজের শক্তি জুটবে। শরীরচর্চা, ডায়েট মেনে খাওয়াদাওয়া এগুলো নিত্যদিনের অভ্যাসের অংশ করে তুললেও অনেক সময়ই কাজের চাপে রুটিন এলোমেলা হয়ে যায়।
পুষ্টিবিদদরা কিন্তু বলছেন এই এলোমেলো হওয়ার ক্ষতি রুখতে নজর দিতে হবে দিনের প্রথম খাবার তথা ব্রেকফাস্টের দিকে। ভারতের এক পুষ্টিবিদের মতে, ‘শরীরটা গাড়ির মতো। বের হওয়ার সময় তেল ভরে নিলে যেমন সারা রাস্তা নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করা যায়, তেমনই দিনের শুরুর খাওয়াটাই হতে হবে জবরদস্ত ও ভারী। তার পরের সব খাওয়ার পরিমাণই আগেরটার তুলনায় কমবে। দু’-তিন ঘণ্টা অন্তর খাওয়ার চেষ্টা করুন।’ তবে এই সকালে খাওয়ার প্রশ্নেই প্রধান ভুলগুলো করে থাকি আমরা। হয়, সময়ে খাই না নয়তো ভুল খাবার খেয়ে ফেলি। অনেকে আবার ব্রেকফাস্ট খাই-ই না।
এই সব ভুল অভ্যাসই শরীরে ক্ষতি করে, মেদ বাড়ায়। সারা রাত খালি পেটে থাকার পর সকালেও শরীরকে খাবার থেকে বঞ্চিত করলে মেদ বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। শরীরচর্চা বাকি সারা দিন ডায়েটেও সেই ক্ষতি ঢাকে না। তাই সকাল ডাইনিং টেবিল সাজানোর আগে জেনে নিন, প্রতি দিনের প্যাকেটজাত খাবার, পাউরুটি, লুচি-পরোটা বা সালামি-সসেজ সিরিয়ালে ভরসা না করে কী কী খাবারে আস্থা রাখাটা জরুরি। পুষ্টিগুণ সঠিক পরিমাণে পেতে যেগুলো খাবার আপনাকে সাহায্য করবে:
লেবু-পানি: চা নয়, দিন শুরু করুন ঈষদুষ্ণ পানিতে লেবু মিশিয়ে সেই জল খেয়ে। গরম পানির সঙ্গে লেবু খেলে অ্যাসিড তো হয়ই না উল্টো শরীরের বাড়তি টক্সিন বার করে শরীরকে দূষণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। সকালে নানা রকম ওষুধ খাওয়ার কারণে এই জল খেতে না পারলে দিনের যে কোনও সময় খালি পেটে খেতেই পারেন। তিন-চার বার পর্যন্ত খাওয়া যায় এই জল।
গ্রিন টি: মেটাবলিজম বাড়িয়ে নিন সকালের দিকেই। কফি নয়, আস্থা রাখতে শুরু করুন গ্রিন টি-তে। সঙ্গে বিস্কুট বাদ দিন। দু’-এক মুঠো মুড়িও চলতে পারে। তবে বিস্কুটে ময়দা ও অ্যারারুট থাকে। তাই চায়ের সঙ্গে নিয়ম করে বিস্কুট খাওয়া বাদ দিন।
ভেজ বা চিকেন সালাড: দিন শুরু করুন শাক-সবজি ও প্রোটিন দিয়ে। চিকেন কিমা সেদ্ধ করে শশা-টমাটো-গাজর-লেটুস-কাজুবাদাম, পিঁয়াজের সঙ্গে দিন। অল্প বিটনুন ও গোলমরিচ ছড়িয়ে দিন উপর থেকে। ভাল হয় দই মাখিয়ে খেলেও। তবে চিজ, মেয়োনিজ একেবারেই নয়। অনেকে এমন সালাডে সেদ্ধ ডিমও কুচিয়ে দেন। সেটিও পেট ভরা ও পুষ্টি দুইয়ের জন্যই ভাল।
ডিম সেদ্ধ: পোচ, অমলেট নয়, তেল এড়াতে সকালের খাবারে রাখুন সেদ্ধ ডিম। কুসুম-সহ খেলেও কোনও ক্ষতি নেই। আধুনিক গবেষণা কোলেস্টেরলের সঙ্গে ডিমের কুসুমের শত্রুতা শিকার করে না।
রুটি: খুব আধুনিক খাবার পছন্দ না হলে আস্থা রাখতেই পারেন বাঙালি খাবার রুটিতে। রুটি-সবজি যেমন উপকারী, তেমনি রুটির মধ্যে ছানা মাখিয়ে খেতে পারেন, চলতে পারে রুটি, ডালও।
ওটস: দই বা দুধের সঙ্গে ওটস খেতে পারেন সকালের খাবারে। পেট যেমন ভরা থাকবে, তেমনই শরীর পাবে তার প্রয়োজনীয় ফাইবার।
ফল: খাবারে এগুলোরই সঙ্গে রাখুন একটা বা দুটো ফল। প্যাকেটবন্দি ফলের রস নয় বরং ফলের রস খেতে ইচ্ছে করলে বাড়িতেই রস করে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নিন। তবে ফল চিবিয়ে খাওয়াতেই উপকার বেশি।
প্রতিদিন ডেস্ক