ভূমি জটিলতায় মেহেরপুরের গাংনী বাজারে পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ কাজ আবারও বন্ধ হলো। জেলা প্রশাসক মো: শামিম হাসানের নির্দেশে গাংনী ইউএনও এ কাজ বন্ধ করেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ভূমি জটিলতা নিরসন না করে গত ১২ জুলাই শুক্রবার পুনরায় কাজ শুরু করেন পৌর মেয়র আহমেদ আলী।
তবে, পৌর কর্তৃপক্ষ বলেছেন হাইকোর্টের আদেশে নির্মাণ কাজ বন্ধের কোনো আদেশ দেননি। ওই রায়ে বলা হয়েছে, দুই মাসের মধ্যে নিস্পত্তির আদেশ দেওয়া হয়েছে, নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার কোনো আদেশ দেননি হাইকোটের মাননীয় বিচারপতি। হাইকোর্টের এই আদেশের ফলে প্রায় ২ মাস নির্মাণ করা বন্ধ ছিল।
আল ফারুক নামের গাংনী পৌর সভার একজন নাগরিক জায়গার মালিকানা নির্ধারণের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। যার রিট পিটিশন নং ৫০০৩/২০২৪ ইং। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গত ১২ মে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিবকে দরখাস্তখানা দুই মাসের মধ্যে নিস্পত্তির আদেশ দেন। এই আদেশের পর দীর্ঘদিন যাবৎ এই মার্কেটটির নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল।
এদিকে বিষয়টির নিস্পত্তি না হওয়ায় হাইকোর্ট বিভাগের এই আদেশের বলে দরখাস্তকারী মো: আল ফারুক মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর পৃথক আবেদন করেছেন।
দরখাস্তকারী আল ফারুক বলেন, হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে গাংনী পৌরসভার মেয়র আহমেদ আলী হঠাৎ আজ শুক্রবার সকালে পৌর মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
নগর উন্নয়ন পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত গাংনী পৌর তহহাট ও চালপট্টি সুপার মার্কেটের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ২৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা। চলতি বছরের ১২ই ফেব্রুয়ারী মেহেরপুর-২(গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য ডা. এএসএম নাজমুল হক সাগর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন। ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।
গাংনী পৌর মেয়র আহমেদ আলী বলেন, সরকারি কাজে কোন পাবলিক বাধা দিতে পারেন না। তারপরও একজন নাগরিক উচ্চ আদালতে রিট করেছিলেন। আমরা দুই মাস কাজ বন্ধ রেখেছিলাম। দুই মাস পরও মন্ত্রণালয় থেকে কোন চিঠি না আসায় আমরা কাজ শুরু করেছি। কারণ পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ প্রকল্পের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। সময়ের মধ্যে না করতে পারলে প্রকল্পের টাকা ফিরে যাবে। এছাড়া ডিসি ও ইউএনওকে জানিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি।
প্রকল্পের কনসালটেন্ট প্রকৌশলী একরামুল হক বলেন, গাংনী পৌরসভার সুপার মার্কেট নির্মাণ প্রকল্পের ভূমি জটিলতা থাকায় বিষয়টি হেড অফিসে জানিয়েছিলাম। অদ্যবধি হেড অফিস আমাকে কাজ শুরু করার বিষয়ে কিছু জানায়নি। কাজ শুরু হলে সেখানে আমাদের প্রকল্পেরর লোকজনের থাকার কথা ছিলো, এ বিষয়ে আমরা কোন নির্দেশনা পাইনি।
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক শামীম হাসান বলেন, গাংনী পৌরসভা যে জমিতে প্রকল্প গ্রহণ করেছে ওই জমি সরকারি খাস খতিয়ানের জমি। ওই জমিতে পৌরসভা মার্কেট নির্মাণ করতে পারে না। আমি ইতোমধ্যে গাংনীর ইউএনওকে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, গাংনী পৌর মেয়র আমাকে কাজের বিষয়ে কিছু বলেননি।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা বলেন, ডিসি স্যারের নির্দেশে ওই কাজ বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবং বলা হয়েছে ভূমি জটিলতা নিরসণ না করে কাজ করা যাবে না।