ভোটের লড়াই থেকে সরে গিয়ে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবার অঙ্গিকার করলেন গাংনী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এ কে এম শফিকুল আলম।
দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী একেএম শফিকুল আলম। তার প্রতীক কাপ পিরিচ।
আজ মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরের দিকে তার নিজ বাসভবনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিং দিয়ে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
এসময় তার ভাই স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ইছার উদ্দীন, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুনতাজ আলী, মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত প্রভাষক মুরাদ হোসেন, আব্দুল বারী, মনিরুল ইসলাম, আমজাদ হোসেন, আব্দুল ওয়াদুদ, প্রধান মন্ত্রীর ফটো সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম কল্লোলসহ কয়েকজন কর্মী সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী এ কে এম শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচনে প্রচারনা শুরু হবার পর আমি লক্ষ করলাম, প্রচার প্রচারনায় ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে যতটুকু লড়াই করতে হচ্ছে তার চেয়ে বেশি লড়াই করতে হচ্ছে একটি সিন্ডিকেটের সাথে। আগে নির্বাচন করতে গিয়ে অভিজ্ঞতা ছিলো না যে, আগে সিন্ডিকেটের সাথে পরে প্রার্থীদের সাথে লড়াই করতে হবে। লড়াই আমাকে দুটো করতে হচ্ছে। আমাকে সিন্ডিকেট ও প্রার্থীদের সাথে এক সাথে লড়াই করতে হচ্ছে। যা অন্যরা শুধু প্রার্থীদের সাথেই করছে। আবার দীর্ঘদিনের চেনা মানুষকে মাঝে মাঝে অচেনা মনে হতে লাগলো। আমি লক্ষ করলাম ভোটের লড়াই ও সিন্ডিকেটের লড়াই দুটো লড়াই এক সাথে করা যাবেনা। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি একটা লড়াই জাগি রাখবো একটা লড়াই বন্ধ করবো। তাই আমি ভোটের লড়াই থেকে সরে যাচ্ছি তবে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে লড়াই আমি চালিয়ে যাবো। এজন্য আমি নির্বাচন থেকে সরে গেলাম এটাই ফাইনাল কথা। আমার যারা শুভাকাঙ্খী আছেন, তাদের একটা কথাই বলবো এই নির্বাচনে সিন্ডিকেট যেদিকে থাকবে, আমার এবং আমার প্রিয় মানুষগুলো তার বিপক্ষে থাকবে। আমি সিন্ডিকেট বিরোধী ছিলাম এবং আগামীতে থাকবো। আপনারা আমার কথাটার মানে বুঝে সেইভাবে আপনাদের অবস্থান নেবেন।আগামী দিনে ভাল কিছইু হবে।
তিনি আরও বলেন, গাংনী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে তিনজন ব্যক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন গাংনী পৌরমেয়র আহমেদ আলী, মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল আহমেদ ও রাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সাকলায়েন সেপু। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি নির্বাচনে দাঁড়িয়ে মানুষের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছি।
আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও আপনাদের কাছ থেকে সরে যাচ্ছিনি। আপনাদের সাথে সম্পর্ক আমার আগের মত অটুট থাকবে। আপনাদের পাশে থাকবো। বিপদে আপদে আগে যেমন ছিলাম, ভবিষ্যাতেও থাকবো। তেমন কোনো পরিবর্তন হবেনা।
উল্লেখ্য, ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের গাংনীতে মোট ১০ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করলেও মজিরুল ইসলাম ও ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন প্রত্যাহার করে নেন। পরে গতকাল রবিবার (১২ এপ্রিল) পারিবারিক ও ব্যাক্তিগত কারণ দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন সাবেক এমপি পত্নি লাইলা আরজুমান বানু শিলা ও ১৩ এপ্রিল সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন।
বর্তমানে মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ খালেক, গাংনী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ৬ জন ভাইসচেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।